সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্রীরামপুর: ছেলের চলে যাওয়ার খবর আসতেই ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে ফেলেছেন মা। এখনও ভেতরে রয়েছেন তিনি। শ্রীরামপুরে ঋষভ সিংহের বাড়ির সামনে সকাল থেকে জমেছে ভিড়। এসেছেন পরিজন, প্রতিবেশীরা, রাজনীতির লোকজন। সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা খুঁজছেন সকলে।

শ্রীরামপুরের যে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ঋষভের বাবা সন্তোষ সিংহ, সেখানকারই বেনিয়াপাড়ায় তাঁদের বাড়ি। গোটা এলাকায় চেপে বসেছে ৬ বছরের শিশুমৃত্যুর শোক। সকাল থেকে দোকানপাট বন্ধ। ঋষভের মৃত্যুর খবর পেয়ে ব্যবসা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দোকানদাররা। শ্রীরামপুরের ওয়ালশ হাসপাতালে চিকিৎসক থেকে সুইপার- সকলে পরেছেন কালো ব্যাজ। শ্রীরামপুর স্টেশন চত্বরের টোটো চালকরা তাঁদের টোটোয় লাগিয়েছেন শোকবার্তা জ্ঞাপক স্মারক পতাকা। স্থানীয় ছোট বড় রাজনৈতিক নেতারা রয়েছেন এসএসকেএমে, দেহ নিয়ে ফিরবেন তাঁরা।

পরীক্ষা চলছে বলে ঋষভের স্কুল আজ খোলা, তবে এমনিতে বন্ধ। শোকস্তব্ধ অভিভাবকদের অভিযোগ, স্কুলের সময়টা ছাত্রছাত্রীদের পক্ষে মোটেই সুবিধেজনক নয়, তাঁরা বহুবার সকাল ৮টা ১৫-র বদলে সাড়ে আটটা থেকে স্কুল শুরু করে অনুরোধ করেছেন, কান দেয়নি কর্তৃপক্ষ। অথচ এখন ঋষভের মৃত্যুর পর তড়িঘড়ি সময় বদলে সাড়ে আটটা করেছে তারা। তাঁদের দাবি, আগে যদি তাঁদের কথা শোনা হত, তবে হয়তো এভাবে ঋষভকে চলে যেতে হত না। সকালের দিকে শ্রীরামপুরে ট্রেন ঢোকে পৌনে এক ঘণ্টার তফাতে, ফলে বাধ্য হয়ে অনেক অভিভাবক ছেলেমেয়েকে পুলকারে পাঠান। যদি অতিরিক্ত ১৫ মিনিট তাঁদের হাতে থাকত, তবে পুলকারটিকেও হয়ত অমন ঊর্ধ্বশ্বাস দৌড় দিতে হত না।