রাজা চট্টোপাধ্যায়, জলপাইগুড়ি: শিশুদের মধ্যে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কায় আগাম প্রস্তুতি শুরু জলপাইগুড়িতে। জেলার সব সরকারি হাসপাতালে চাইল্ড কেয়ার ইউনিট তৈরিতে জোর দেওয়া হচ্ছে। জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে তৈরি হচ্ছে আলাদা সিসিইউ। সেই সঙ্গে শুধু মহিলাদের জন্য আলাদা কোভিড হাসপাতাল চালু হচ্ছে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের রাত্রি নিবাসে।
করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ সামাল দিতে হিমসিম অবস্থা। তার মধ্যেই চোখ রাঙাচ্ছে মারণ ভাইরাসের তৃতীয় ঢেউ। চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশের আশঙ্কা, তৃতীয় ঢেউয়ে শিশুরা আগের তুলনায় বেশি আক্রান্ত হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে আগাম সতর্কতা হিসেবে জলপাইগুড়ি জেলার সরকারি হাসপাতালগুলিতে চাইল্ড কেয়ার ইউনিট বা সিসিইউ তৈরিতে জোর দেওয়া হচ্ছে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে ২০ বেডের আলাদা সিসিইউ তৈরি হচ্ছে। সেই সঙ্গে জেলার সমস্ত সরকারি হাসপাতালের সিসিইউ-তে বেড বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশ, আগামী ১০ থেকে ১২ দিনের মধ্যে প্রতিটি সরকারি হাসপাতালে ন্যূনতম ২০টি করে সিসিইউ বেড তৈরি রাখতে হবে।এর মধ্যে ৪টে ভেন্টিলেটর বেড থাকবে। সঙ্গে থাকবে অক্সিজেনের ব্যবস্থা।
উত্তরবঙ্গের করোনা চিকিৎসায় বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক সুশান্ত কুমার রায় বলেন, আমাদের মনে হচ্ছে তৃতীয় ঢেউয়ে শিশুদের সংক্রমণ বাড়বে। তাই এই বন্দোবস্ত। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই চালুহয়ে যাবে। আরও হাসপাতালে জায়গা দেখা হচ্ছে। আমরা চাইছি সব শিশুদের যাতে সেফ রাখা যায়। এটা ১০ এবং ১৭ বছরের শিশুদের মধ্যেই বেশি দেখা যাচ্ছে। এটা নিয়ে আমরা স্টাডি করেছি।
সরকারি নথি অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে মোট করোনা আক্রান্তের ৫.৮ শতাংশ শিশু। এর মধ্যে যাদের হাসপাতালে ভর্তি হতে হচ্ছে, তাদের ৮ থেকে ২০ শতাংশের চিকিৎসায় আইসিইউ-র প্রয়োজন হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে জলপাইগুড়ি জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তৎপরতায় খুশি সাধারণ মানুষ। রোগীর আত্মীয় রতন বর্মণ, খুব ভাল উদ্যোগ। শিশুরা তো ভ্যাকসিন পাচ্ছে না। আগামীতে তাদের সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা। আমরা চাই সমস্ত হাসপাতালেই এটা করা উচিত এবং বেডের সংখ্যা যেন বাড়ানো হয়।
শিশুদের পাশাপাশি শুধু মহিলাদের জন্যও ১৫০ বেডের আলাদা হাসপাতাল গড়ে উঠেছে জেলায়। জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের রাত্রি নিবাসে ওই মহিলা হাসপাতাল তৈরির কাজ প্রায় শেষ। প্রতি বেডের সঙ্গে রয়েছে অক্সিজেনের ব্যবস্থা। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, বিশ্ব বাংলা কোভিড হাসপাতাল থেকে সমস্ত করোনা আক্রান্ত মহিলা রোগীদের সেখানে খুব শিগগিরই স্থানান্তরিত করা হবে।