গুয়াহাটি : "যদি মুসলিম ও খ্রিস্টানরা এ দেশের পুজো করেন, নিজেদের প্রথা-ঐতিহ্য ত্যাগ না করেও ভারতীয় সংস্কৃতি অনুসরণ করেন, তাহলে তাঁরাও হিন্দু।" এমনই মন্তব্য করলেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত। অসমে বিদ্বজন, লেখক, সম্পাদকদের এক জমায়েতে বক্তব্য রাখেন তিনি।

Continues below advertisement

RSS-এর শতবর্ষ উদযাপনের অনুষ্ঠানে ভাগবত বলেন, "যাঁরা মাতৃভূমির প্রতি ভক্তি, আমাদের পূর্বপুরুষদের গর্ব এবং আমাদের সংস্কৃতির উত্তরাধিকারকে এগিয়ে নিয়ে যান তাঁরা সকলেই হিন্দু। হিন্দু ধর্মকে ধর্মীয় অর্থে নেওয়া উচিত নয়। হিন্দু ধর্ম এবং হিন্দু সংস্কৃতি খাবার বা পুজো নয়। এটি অন্তর্ভুক্তিমূলক। এটি আরও অনেক মানুষকে গ্রহণ করতে পারে। যদি মুসলিম এবং খ্রিস্টানরা তাদের উপাসনা, রীতিনীতি এবং ঐতিহ্য ত্যাগ না করেও এই দেশের পুজো করে, ভারতীয় সংস্কৃতি অনুসরণ করেন এবং ভারতীয় পূর্বপুরুষদের উপর গর্ব করেন, তাহলে তাঁরা হিন্দু।"

তিনি পাঁচটি মূল সামাজিক রূপান্তর সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে বলেন - পঞ্চ পরিবর্তন: সামাজিক সম্প্রীতি, কুটুম্ব প্রবোধন (পারিবারিক জাগরণ), নাগরিক শৃঙ্খলা, স্বনির্ভরতা এবং পরিবেশ সুরক্ষা। এর মধ্যে আরএসএস প্রধান পরিবার প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করার উপর বিশেষ জোর দিয়েছেন। প্রতিটি পরিবারকে তাদের পূর্বপুরুষদের গল্প সংরক্ষণ করার এবং তরুণ প্রজন্মের মধ্যে দায়িত্ব ও সাংস্কৃতিক গর্ব জাগানোর আহ্বান জানিয়েছেন। ভাগবত স্বাধীনতা সংগ্রামে আরএসএস স্বয়ংসেবকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার উপরও জোর দেন, অসহযোগ আন্দোলন, আইন অমান্য আন্দোলনে ডঃ হেডগেওয়ারের কারাবাস এবং ১৯৪২ সালে ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময় দেশজুড়ে অসংখ্য স্বয়ংসেবকের অবদানের কথা স্মরণ করেন।

Continues below advertisement

প্রসঙ্গত, ভারতকে ‘হিন্দুরাষ্ট্রে’ পরিণত করার যে দাবি, তার সঙ্গে বার বার রাষ্ট্রীয় স্বয়মসেবক সঙ্ঘের (RSS) নাম উঠে এসেছে। বিজেপি-র মাধ্যমে সঙ্ঘ সেই অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছনোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ শোনা যায়। কিন্তু এর আগে সঙ্ঘ-প্রধান মোহন ভাগবত দাবি করেছেন, সঙ্ঘের কোনও রাজনৈতিক দল নেই। 

দিনকয়েক আগে বেঙ্গালুরুতে সঙ্ঘের ১০০ বছর উদযাপনে দু’দিনের বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়। সেখানে ভাগবত দাবি করেন, জাতপাত, ধর্মের নিরিখে সদস্যদের মধ্যে বিভাজন ঘটায় না সঙ্ঘ। বরং জাতীয় ঐক্যকে সামনে রেখেই কাজ করে। সঙ্ঘে মুসলিমদের জায়গা হবে কি না জানতে চাইলে বলেন, “সঙ্ঘে কোনও ব্রাহ্মণের জায়গা নেই, অন্য কোনও জাত, মুসলিম, খ্রিস্টান, কারও জায়গা নেই। শুধুমাত্র হিন্দুদের আসার অনুমতি রয়েছে। মুসলিম হোন বা খ্রিস্টান বা অন্য যে কোনও সম্প্রদায় সঙ্ঘে শামিল হতে পারেন। কিন্তু নিজের বিচ্ছিন্নতা বাইরে রেখে আসতে হবে।”