নয়াদিল্লি: বাল্যবিবাহ থেকে সতীদাহ, বিধবা বিবাহ নিষিদ্ধ থেকে নারীর অশিক্ষা, ভারতীয় সমাজে নারীকে দমিয়ে রাখার রেওয়াজ ভারতীয় সমাজে ছিল না, ইসলামি আগ্রাসনের হাত ধরেই তার প্রবেশ ঘটে বলে এবার দাবি করল বিজেপি-র অভিভাবক সংস্থা রাষ্ট্রীয় স্বয়ম সেবক সঙ্ঘ (RSS)। নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে ভাষণ দিতে গিয়ে সঙ্ঘের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণগোপাল (Krishna Gopal) এই দাবি করেছেন। 


রবিবার দিল্লি ইউনিভার্সিটিতে আয়োজিত নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করতে গিয়েছিলেন কৃষ্ণগোপাল (Women Empowerment)। 'নারীশক্তি সঙ্গম' শীর্ষক ওই অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করতে গিয়ে এমন দাবি করেন কৃষ্ণগোপাল। তাঁর মতে, ১২ শতকের আগে পর্যন্ত ভারতীয় সমাজে নারীদের যথেষ্ট স্বাধীনতা ছিল। সমাজ গঠনে তাঁদের অবদানও ছিল যথেষ্ট। 


এর পরই ইসলামি শাসনকাল এবং শাসকদের দিকে আঙুল তোলেন কৃষ্ণগোপাল। বলেন, "মধ্যযুগ সময়কালটি অত্যন্ত কঠিন ছিল। পরাধীনতার শৃঙ্খলে বাঁধা পড়ছিল গোটা দেশ। মন্দির ভাঙা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় ভাঙা হয়, মেয়েদের জীবনে বিপদ নেমে আসে। লক্ষ লক্ষ মহিলাকে অপহরণ করে বিক্রি করে দেওয়া হয় বিদেশের বাজারে। আহমেদ শাহ আবদালি, মহম্মদ ঘোরী, গজনীর মাহমুদ এখান থেকে মেয়েদের নিয়ে গিয়ে বিক্রি করে দিতেন। অত্যন্ত অপমানজনক সময়কাল ছিল। মেয়েদের বাঁচাতেই আমাদের সমাজ সেই সময় তাঁদের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপায়।"


আরও পড়ুন: Rahul Gandhi: শ্রাবণ মাসে মাটন ভক্ষণ, পৈতেধারী রাহুল হিন্দুদের আঘাত করেছেন! অভিযোগ BJP-র


ইসলামি শাসকরা আসার আগে মেয়েদের অল্প বয়সে বিয়ে দেওয়ার চল ছিল না বলেও দাবি করেন কৃষ্ণগোপাল। তাঁর বক্তব্য, "আমাদের মেয়েদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতেই বাল্যবিবাহের সূচনা হয়। তার আগে কোনও সতীপ্রথা ছিল না। আগে হাতে গোনা কিছু ঘটনা হয়ত থেকে থাকবে, কিন্তু ইসলামি আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতেই মহিলারা দলে দলে সতী হন, জহরব্রত পালন করতে শুরু করেন।"


আগে ভারতীয় সমাজে বিধবা বিবাহেও কোনও নিষেধাজ্ঞা ছিল না বলে দাবি করেন কৃষ্ণগোপাল। তিনি বলেন, "এর ফলেই অশিক্ষার অন্ধকারে চলে যেতে শুরু করে মেয়েরা। বাল্যবিবাহের রেওয়াজ শুরু হয়। বিধবা বিবাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। হাজারো নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয় মেয়েদের উপর। সমাজে মেয়েদের অধঃপতন শুরু হয় সেই সময় থেকেই।" ওই পরিস্থিতিতে তা ছাড়া উপায়ও ছিল না বলে দাবি করেন কৃষ্ণগোপাল। শুধু তাই নয়, পশ্চিমি সংস্কৃতিরও বিরোধিতা করেন তিনি। হেঁশেলের কাজ বৈজ্ঞানিক গবেষণার মতোই সমান গুরুত্বপূর্ণ বলে দাবি করেন।