টিকাটি তৈরি করেছে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রক এবং স্থানীয় গামেলিয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউট। এই মুহূর্তে এর তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা চলছে। জানা গিয়েছে, এই টিকা প্রথম দেওয়া হবে চিকিৎসক এবং বয়স্ক মানুষদের। রেজিস্ট্রেশন মিটে গেলে প্রায় ১,৬০০ লোকের ওপর এর পরীক্ষা হবে।
কিন্তু এই টিকার করোনা প্রতিরোধ ক্ষমতা গোটা বিশ্বের বিশেষজ্ঞরা চিন্তিত। এপ্রিল মাসে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আধিকারিকদের নির্দেশ দেন, যতটা সম্ভব কম সময়ে করোনার ওষুধ ও টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু করতে। এরপর ১৭ জুন ৭৬ জনের ওপর এই টিকা পরীক্ষা করে শুরু হয় ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল। অর্ধেককে দেওয়া হয় টিকার তরলীকৃত অংশ, বাকিদের দেওয়া হয় জলে মিশে যায় এমন গুঁড়ো। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দাবি, সব স্বেচ্ছাসেবকরা ভাল আছেন, শরীরে কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও হয়নি। তাই সেপ্টেম্বর থেকে এই টিকা প্রচুর পরিমাণে উৎপাদন করবে তারা।
যদিও এত তাড়াতাড়ি এই গণ উৎপাদনের কথা শুনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা রাশিয়াকে অনুরোধ করেছে, নিরাপদ ও কার্যকর টিকা তৈরির জন্য যে গাইডলাইন আছে তা মেনে চলতে। তাদের মুখপাত্র ক্রিশ্চিয়ান লিন্ডমেয়ার বলেছেন, টিকা তৈরির একটা সূত্র পাওয়া আর পর মুহূর্তে তার সব কটা পর্যায়ের পরীক্ষা শেষ করার মধ্যে বিরাট তফাত আছে। জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ লরেন্স গোস্টিনও রাশিয়ার এত তাড়াহুড়ো দেখে উদ্বিগ্ন, তাঁর আশঙ্কা, রাশিয়া যেভাবে অল্প সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবকের ওপর দ্রুত সবকটা পর্যায়ের পরীক্ষা চালিয়েছে তাতে মনে হচ্ছে, এই টিকা শুধু অকার্যকর হবে না, বিপজ্জনকও হবে।
বিখ্যাত সংক্রমক রোগ বিশেষজ্ঞ অ্যান্টনি ফসি বলেছেন, যার তার ওপর টিকা প্রয়োগের আগে চিনা ও রুশ বিশেষজ্ঞরা টিকার ভালভাবে পরীক্ষা করছেন বলে তাঁর আশা। কারণ ঠিকমত পরীক্ষার আগেই টিকা তৈরি হয়ে গিয়েছে বলে দাবি করা অত্যন্ত বিপজ্জনক, মন্তব্য করেছেন তিনি।