কলকাতা: তীব্রতার নতুন পর্যায়ে পৌঁছে গেল রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ (Ukraine Russia War)। ইউক্রেনের উত্তর-পূর্বের দিকে খারকিভ শহরে একটি কারখানায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কথা জানিয়েছে রাশিয়া। সাঁজোয়া গাড়ি মেরামত করা হত কারখানাটিতে। তবে ঠিক কখন হামলা চালানো হয়েছিল, তা নিয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু জানায়নি মস্কো। অন্য দিকে ইউক্রেনের পাল্টা ড্রোন হামলায় রাশিয়ার দক্ষিণ পশ্চিম দিকে একটি তেলের ডিপোয় রাখা জ্বালানির ট্যাঙ্কারে আগুন ধরে যায়। তবে কোনওক্রমে সেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে পুতিন-প্রশাসন।
যুদ্ধের তীব্রতা...
রবিবার, অন্তত ছ'টি ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলা রোখার কথা জানিয়েছে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। দু'দেশের মধ্যে যুদ্ধের আবহ যখন তুঙ্গে, ঠিক তখনই উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে 'সাম্যের নীতি মেনে উপযুক্ত সমন্বয়ের' বার্তা দিল মস্কো। রাষ্ট্রপুঞ্জ যে পিয়ংইয়ংয়ের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে, সে সম্পর্কে সম্যক ওয়াকিবহাল তারা। সেই প্রেক্ষিতেই রুশ বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ এদিন বলেন, 'আমরা নয়, রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। তাই নিরাপত্তা পরিষদকে আর্জি জানাচ্ছি। সঙ্গে একথাও ঘোষণা করছি, উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সাম্যের নীতি মেনে উপযুক্ত সমন্বয়ের সম্পর্ক তৈরি করব।' এতেই শেষ নয়। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে একটি সাক্ষাৎকারে তিনি সরাসরি আমেরিকাকে বিঁধে আরও বলেন, 'ওরা মুখে যা-ই বলুক, এই যুদ্ধ আসলে ওরাই করছে। অস্ত্রশস্ত্র থেকে গোয়েন্দা তথ্য়, উপগ্রহচিত্র থেকে পাওয়া তথ্য, আসলে ওরাই আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে।...ইউক্রেনে এখন যা চলছে তার প্রস্তুতি অনেক দিন ধরে নেওয়া হয়েছে। রাশিয়াকে কৌশলে মাত দিতেই এমন করা হয়।' রুশ বিদেশমন্ত্রীর এমন মন্তব্য ও উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি প্রকাশ্য়ে আসতেই আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। পশ্চিম দেশগুলির আশঙ্কা, ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধে বেশ কিছু ভাবে উত্তর কোরিয়ার সাহায্য় পেতেই এই সম্পর্ক তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাশিয়া। আর যে ভাবে যুদ্ধের তীব্রতা বেড়েছে, তাতে এই জল্পনা ভিত্তিহীন নয় বলেই মনে করছে আন্তর্জাতিক মহল।
বিপর্যয়ের খতিয়ান...
ইউক্রেনের দক্ষিণে খেরসন এলাকায় চাষের জন্য জমি কর্ষণ করতে গিয়ে একটি 'ল্যান্ডমাইন' বিস্ফোরণে মারা যান এক কৃষি শ্রমিক। জখম হন আর এক জন। যুদ্ধের এক পর্যায়ে খেরসন একসময়ে দখল করে নিয়েছিল রাশিয়া। পরে তা পুনরুদ্ধার করা হলেও এলাকার নানা জায়গায় 'ল্যান্ডমাইন' পোঁতা রয়েছে। সেগুলির বিস্ফোরণে প্রাণ হারানোর আশঙ্কা থাকেই। রবিবার সে রকমই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে খেরসনে। পাশাপাশি, ইন্টারন্যাশনাল রেড ক্রস সূত্রে খবর, খেরসনের মেয়র এখন রাশিয়ার হাতে যুদ্ধবন্দি। রবিবার কিইভ দাবি করে, মস্কো অন্তত ৬টা ড্রোন হামলা ও ১০টি ক্ষেপণাস্ত্র হানা চালিয়ছে। মূলত ওডেসা এলাকায় হামলা চালায় তারা। অন্য দিকে, রাশিয়া বক্তব্য, ক্রিমিয়ার দিকে ৬টি ড্রোন হানা আটকেছে মস্কো। এসবের মধ্যেই আগামীকাল, সোমবার ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অফ জাস্টিসে মুখোমুখি হতে চলেছে রাশিয়া ও ইউক্রেন। জাতিনিধন আটকাতেই ইউক্রেনে হামলা চালিয়েছিল রাশিয়া, এই মর্মে মামলার শুনানি ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অফ জাস্টিসে।
আরও পড়ুন:ঘনজঙ্গল-বন্ধুর জমিই সহায়! কাশ্মীরে নয়া কৌশল জঙ্গিদের, ১০০ ঘণ্টা পরও ধরাছোঁয়ার বাইরে