নয়া দিল্লি: যুদ্ধের জেরে মাঝপথে ডাক্তারি পড়াশোনা ছেড়ে, ভারতে ফিরতে হচ্ছে পড়ুয়াদের। কিন্তু, বাকি কোর্সের কী হবে? সেই দুশ্চিন্তা পিছু ছাড়ছে না। কেন্দ্রের কাছে বিষয়টা বিবেচনার আর্জি জানিয়েছেন ইউক্রেন-ফেরত অনেক পড়ুয়া। বিষয়টা দেখার আশ্বাস দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক।
লিভের থিয়েটার এখন ত্রাণ শিবির। ইউক্রেনের সাধারণ নাগরিকদের অস্ত্র প্রশিক্ষণ দিচ্ছে মার্কিন সেনার প্রাক্তন অফিসাররা। কারণ, ইউক্রেনের কিভের আরও কাছে পৌঁছে গেছে রুশ সেনার কনভয়। যুদ্ধ যে এখনই থামার নয় তা কার্যত স্পষ্ট। এই পরিস্থিতিতে প্রাণ বাঁচাতে, ইউক্রেন ছেড়ে পোল্যান্ড, হাঙ্গেরি হয়ে ভারতে ফিরছেন, এদেশের হাজার হাজার পড়ুয়া।
এর মধ্যে অধিকাংশ ডাক্তারির ছাত্র-ছাত্রী। ইউক্রেনের বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ডাক্তারি পড়ার খরচ ভারতের তুলনায় অনেক কম। তাই অনেকেই কষ্ট করে, ছেলে-মেয়েকে ইউক্রেনে পাঠান ডাক্তারি পড়তে। তাঁরাই এখন মহা বিপদে পড়েছেন। মাঝপথে পড়াশোনা ছেড়ে, দেশে ফিরতে হচ্ছে। কবে যুদ্ধ থামবে, কবে ইউক্রেনের পরিস্থিতি ঠাণ্ডা হবে, কবে সব স্বাভাবিক হবে, সে উত্তর তাবড় কূটনীতিকদের কাছেও নেই। ফলে বাকি কোর্সের কী হবে, সেই দুশ্চিন্তা এই পড়ুয়াদের পিছু ছাড়ছে না।
ফিফথ ইয়ারের ছাত্র, হাওড়ার বাসিন্দা রোহন আজাদ লস্কর থেকে সেকেন্ড ইয়ারের সায়ক বিশ্বাস। সবার ভাবনা একটাই, এবার তাদের ডাক্তারি পড়ার কী হবে? ইউক্রেন ফেরত ডাক্তারি পড়ুয়া রোহন আজাদ লস্কর, '২ মাস বাকি ছিল... পাব কিনা বুঝতে পারছি না। ফেরত যেতে চাই না। ২-৩ বছরেও ঠিক হবে কিনা জানি না'। অনেকে ইউক্রেন-ফেরত ডাক্তারি পড়ুয়াই চাইছেন তাদের জন্য উদ্যোগ নিক কেন্দ্র।
ইউক্রেন ফেরত ডাক্তারি পড়ুয়া শ্রীতমা মৌলিক, "চাইব ইন্ডিয়ান সরকার কোর্স কমপ্লিট করতে হেল্প করুক। পোল্যান্ড সরকার বাকি কোর্স নিজের ইউনিভার্সিটিতে কমপ্লিট করতে পারবে। ভারত সরকার সেরকম ব্যবস্থা করলে, এখান থেকে শিফট করা কঠিন হয়ে যাবে।" এদিন, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের যুগ্মসচিব অবশ্য পরবর্তীকালে বিষয়টি বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন।
আপাতত যুদ্ধের জেরে এই ডাক্তারি পড়ুয়াদের ভবিষ্যত অনিশ্চয়তার মেঘে ঢাকা। সেই মেঘ কবে কাটবে, উত্তর নেই কারও কাছে।