মস্কো: গত মাসেই রাশিয়া ছাড়পত্র দিয়েছিল কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন স্পুটনিক ভি-কে। এবার দ্য ল্যানসেট জার্নালে প্রকাশিত প্রাথমিক পরীক্ষার ফলাফল অনুযায়ী, মানব শরীরে ছোটখাটো পরীক্ষামূলক প্রয়োগে অ্যান্টিবডির হদিশ মিলেছে এবং এর কোনও গুরুতর ক্ষতিকারক প্রভাবও নেই।
৭৬ জন মানুষের ওপর দুই দফায় ভ্যাকসিনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ হয় জুন ও জুলাইয়ে। এতে দেখা গিয়েছে যে, ১০০ শতাংশ অংশগ্রহণকারীর শরীরেই অ্যান্টিবডি গঠিত হয়েছে। কোনও ক্ষতিকারক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও দেখা যায়নি বলে ল্যানসেট জানিয়েছে।
রাশিয়া ঘরোয়াভাবে ব্যবহারের জন্য এই ভ্যাকসিনকে অনুমতি দিয়েছে। বিশ্বের প্রথম কোনও দেশ হিসেবে ভ্যাকসিনের ছাড়পত্র দিয়েছে রাশিয়া। বড় আকারে কোনও পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগেই এই ছাড়পত্র মঞ্জুর করা হয়।
৩৮ জন স্বাস্থ্যবান প্রাপ্তবয়স্ককে নিয়ে দুটি ৪২ দিনের পরীক্ষায় কোনও গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। সেইসঙ্গে অংশগ্রহণকারীদের শরীরে কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরির বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে বলে ল্যানসেট জানিয়েছে। এতে আরও বলা হয়েছে, দীর্ঘ মেয়াদে এর সুরক্ষা ও কার্যকারিতা যাচাইয়ের জন্য আরও বড়সড় আকারে ও "প্লাসিবো কম্পারিজন" সহ দীর্ঘ মেয়াদি ট্রায়ালের প্রয়োজন।
উল্লেখ্য, স্পুটনিক ভি ভ্যাকসিন সম্পর্কে কিছু বিশেষজ্ঞ ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁরা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি পরীক্ষা ও নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত ব্যবস্থা গৃহীত না হওয়া পর্যন্ত এর ব্যবহারের বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছেন।
কিন্তু এরমধ্যে একটি আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রাথমিকভাবে এর সাফল্যের দিকটি তুলে ধরা হল। গত সপ্তাহেই বড় সড় আকারে ভ্যাকসিনের পরীক্ষা শুরু করেছে রাশিয়া। এরমধ্যে ল্যানসেট জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদন সমালোচকদের জবাব দিয়েছে বলে মনে করছেন মস্কোর এক আধিকারিক।
রাশিয়ার ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড (আরডিআইএফ)-এর প্রধান কিরিল ডিমিত্রিয়েভ বলেছেন, গত তিন সপ্তাহ ধরে রাশিয়ার ভ্যাকসিনকে কলঙ্কিত করার লক্ষ্যে যে সমস্ত প্রশ্ন তোলা হচ্ছিল, এর (প্রকাশনা) মাধ্যমে সেই সব প্রশ্নের জবাব দেওয়া গিয়েছে।
ডিমিত্রিয়েভ জানিয়েছেন, স্পুটনিক ভি-র বড়সড় পরীক্ষা গত সপ্তাহে শুরু হয়েছে এবং এজন্য ইতিমধ্যেই ৩,০০০ জনকে নিয়োগ করা হয়েছে। এর ফলাফল চলতি বছরের অক্টোবর বা নভেম্বরে পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।


ভ্যাকসিনের প্রাথমিক পর্বের ফলাফল সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে আমেরিকার জন্স হপকিন্স ব্লুমবার্গ স্কুল অফ পাবলিক হেল্থের ইন্টারন্যাশনাল ভ্যাকসিন সেন্টারের লিড অথর ড. নাওর বার-জেভ বলেছেন, উৎসাহব্যাঞ্জক তবে খুবই সামান্য।