গাজিয়াবাদ: বিয়ের নামে প্রতারণা। এক-আধজনকে নয়, গত দশ বছরে প্রায় জনা আটেক বয়স্ক মানুষকে ঠকিয়ে পথে বসিয়েছে 'লুটেরা কনে'। বিয়ে করে টাকাপয়সা ও গয়নাগাঁটি হাতিয়ে চম্পট- এভাবেই প্রতারণার জাল বিছিয়েছিল ওই মহিলা। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। গাজিয়াবাদের এক নির্মাণ ঠিকাদারকে ঠকিয়ে পুলিশের জালে ধরা পড়ল ওই প্রতারক। গাজিয়াবাদের ৬৬ বছরের নির্মাণ-ঠিকাদার যুগল কিশোরকে বিয়ের এক সপ্তাহ পরেই ১৫ লক্ষ টাকার জিনিসপত্র নিয়ে পালিয়েছিল সে।
গাজিয়াবাদের কবি নগর একালার বাসিন্দা যুগলের স্ত্রী এক বছর আগে মারা গিয়েছিলেন। ছেলেও বাবার থেকে আলাদা হয়ে আলাদা বাড়িতে থাকার সিদ্ধান্ত নেন। এরফলে বেশ কিছুদিন যুগল একাকীত্বে ভুগছিলেন। এরইমধ্যে সংবাদপত্রে পাত্র-পাত্রী সংস্থা-খন্না বিবাহ কেন্দ্রের বিজ্ঞাপন নজরে পড়ে তাঁর। সংস্থা তাদের বিজ্ঞাপনে বয়স্ক ও বিবাহবিচ্ছিন্নদের জন্য উপযুক্ত পাত্রপাত্রী খুঁজে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।
একজন সঙ্গীর খোঁজে থাকা যুগল এই সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সংস্থার কর্ণধার মঞ্জু খন্না তার সঙ্গে মনিকা মালিকের পরিচয় করিয়ে দেয়। বলেছিল- এই পাত্রী যুগলের পক্ষে একেবারে রাজযোটক। মনিকা যুগলকে জানায় ,সে বিবাহবিচ্ছিন্না। কয়েক সপ্তাহের কথাবার্তার পর দুজনে ২০১৯-এর অগাস্টে বিয়ে করেন।
যুগলের নতুন দাম্পত্য জীবন শুরু হয় কবি নগরের বাড়িতে। কিন্তু যুগলের এই সুখের পর্ব একেবারেই স্থায়ী হল না। বিয়ের মাস-দুয়েক পরেই টাকা-পয়সা ও গয়নাগাঁটি নিয়ে উধাও হয়ে যায় মনিকা।
এরপরই যুগল এই পাত্র-পাত্রী সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কিন্তু এর মালিক যুগলের বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা করার হুমকি দেয়। সেইসঙ্গে টাকাও দাবি করে। পরে যুগল মনিকার আগের স্বামীকে খুঁজে বের করেন। জানতে পারেন, তাঁকেও একইভাবে ঠকিয়ে পালিয়েছিল মনিকা।
এরপর যুগল পুলিশের দ্বারস্থ হন এবং ঠগ কনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। তদন্তে নেমে তো পুলিশের চক্ষু চড়কগাছ হওয়ার যোগাড়! গত ১০ বছর ধরে এভাবেই বয়স্ক ব্যক্তিদের বিয়ের নামে প্রতারণা করে আসছে। এভাবে প্রায় আটজনকে সে ঠকিয়েছে। আর প্রত্যেকবারই বিয়ের যোগাযোগ করে দিয়েছে খন্না বিবাহ কেন্দ্র।
পুলিশ মনিকা ও তার পরিবার এবং এজেন্সির বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪১৯ (নাম ভাঁড়িয়ে প্রতারণা, ৪২০ (প্রতারণা), ৩৮০ (চুরি), ৩৮৩ (হুমকি দিয়ে তোলা আদায়) ও ১২০ বি (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র) ধারায় মামলা দায়ের করেছে। শহরের পুলিশ সুপার অভিষেক ভার্মা জানিয়েছেন, ঘটনার তদন্ত চলছে।