নয়াদিল্লি : "পুরো দেশ, পুরো বিশ্ব বলছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে জোকার বানিয়েছেন ট্রাম্প।" 'অপারেশন সিঁদুর' নিয়ে আলোচনায় কেন্দ্রকে কার্যত তুলোধনা করলেন তৃণমূল সাংসদ সায়নী ঘোষের। এদিন লোকসভায় বক্তব্য রাখতে উঠে পহেলগাঁও-ইস্যুতে একাধিক প্রশ্ন তুলে দেন সায়নী। পাশাপাশি ট্রাম্পের আগ বাড়িয়ে সংঘর্ষবিরতি ঘোষণা নিয়েও চাঁচাছোলা ভাষায় কেন্দ্রকে নিশানা করেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, "ঝুঁকি আমরা নেব, অপারেশন আমরা করব, আর ক্ষীর চাচা চৌধুরী খেয়ে চলে যাবেন ? এইজন্য আমরা এখানে বসে আছি ?"

Continues below advertisement

সায়নীর বক্তব্যে উঠে আসে পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের কথা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আশ্বাসের কথা তুলে ধরে তৃণমূল সাংসদের প্রশ্ন, "যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গতবার সংসদে এবং নির্বাচন ক্ষেত্রেও বহুবার এবং আজ অবধি বলেছেন যে, পাক অধিকৃত কাশ্মীর আমাদের এবং আমরা সেটা যে কোনও প্রকারে নিয়ে ছাড়ব, আমি জানতে চাই যে, এত একটা সুবর্ণ সুযোগ থাকা সত্ত্বেও আমরা কেন এটা হাতছাড়া করলাম ?আপনারা ইটের জবাব ইট ছুড়ে দিয়েছেন। কিন্তু, দেশ চেয়েছিল ইটের জবাব পাথর ছুড়ে দেওয়া হোক।"

জম্মু ও কাশ্মীরের LG মনোজ সিনহার বক্তব্যকে হাতিয়ার করে সায়নীর প্রশ্ন, "উনি পহেলগাঁও কাণ্ড সম্বন্ধে সবাইকে বলেছেন যে এটি একটি চরম নিরাপত্তা ব্যর্থতা। যদি সত্যিই এটা একটা চরম নিরাপত্তা ব্যর্থতা হয়ে থাকে, তাহলে কেন ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো প্রধানকে কোনও জবাবদিহি করা হল না। কেন একমাসের মধ্যে তাঁর চাকরির মেয়াদ বাড়িয়ে পুরস্কৃত করা হল ? তাঁকে সরিয়ে দিয়ে দেশের মানুষকে একটা বার্তা দিতেন, দেশে নিরাপত্তা ব্যর্থতার কোনও জায়গা নেই। কিন্তু, আপনারা সেটা করেননি।" তাঁর আরও প্রশ্ন, "অপারেশন সিঁদুর তো পরে আসবে। আগে জানতে হবে যে এতগুলো জঙ্গি এল কোথা থেকে ? আজ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলছিলেন, এল তো কী হল ? এসেছে তো এসেছে ! এরকমভাবে হয় না। যেখানে হাজার হাজার পর্যটক পৌঁছাতে পারলেন, সেখানে যেখানে চারজন জঙ্গি পৌঁছাতে পারল, সেখানে কেন ১০ জন পুলিশ পৌঁছাতে পারল না ? এটা আমরা জানতে চাই।" প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ের বৈসরণ উপত্যকায় নিরীহ পর্যটকদের উপর নির্বিচারে গুলি চালায় জঙ্গিরা। ২৬ জন নিরীহের প্রাণ যায়। এর পাল্টা 'অপারেশন সিঁদুর' চালিয়ে পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ৯টি জঙ্গি ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেয় ভারতীয় নিরাপত্তাবাহিনী। এরপর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে তীব্র উত্তেজনা ছড়ায়। যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়। যদিও উভয় দেশ পুরো দস্তুর যুদ্ধ নেমে পড়ার আগে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আচমকা সংঘর্ষবিরতির কথা ঘোষণা করেন। যা নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। এর পাশাপাশি পহেলগাঁওয়ের ঘটনায় নিরাপত্তা ব্যর্থতাও এখন চর্চার বিষয়। যা নিয়ে একের পর এক বিরোধী সাংসদ নিশানা শানাচ্ছেন কেন্দ্রের উদ্দেশে। 

Continues below advertisement