নয়াদিল্লি: উত্তরপ্রদেশ যাওয়ার পথে দিল্লির সীমানায় ফের বাধা রাহুল গাঁধী এবং প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরাকে। সম্ভলে সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনায় পীড়িত পরিবারগুলির সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছিলেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল এবং কংগ্রেসের নবনির্বাচিত সাংসদ প্রিয়ঙ্কা। কিন্তু গাজিপুর সীমানায় তাঁদের রাস্তা আটকায় পুলিশ। সেই নিয়ে উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। রাহুল জানান, তাঁর সাংবিধানিক অধিকার খর্ব করা হচ্ছে। কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার দেশের সংবিধানকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। (Sambhal News)
'শাহি জামা মসজিদে'র সমীক্ষা ঘিরে সম্প্রতি তেতে ওঠে উত্তরপ্রদেশের সম্ভল। বেঘোরে প্রাণ হারান চার সংখ্যালঘু যুবক। পরিবারের অভিযোগ পুলিশ নিরস্ত্র যুবকদের গুলি করে মেরেছে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ। সেই থেকে থমথমে পরিস্থিতি সম্ভলে। এমন পরিস্থিতিতে মৃতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে উদ্যত হন রাহুল এবং প্রিয়ঙ্কা। (Rahul Gandhi)
বুধবার দলীয় কর্মী এবং সমর্থকদের নিয়ে সম্ভলের উদ্দেশে রওনা দেন রাহুল এবং প্রিয়ঙ্কা। কিন্তু গাজিপুর সীমানায় তাঁদের রাস্তা আটকায় পুলিশ। এমন স্পর্শকাতর পরিস্থিতিতে তাঁদের সম্ভল যেতে দেওয়া হবে না বলে জানানো হয়। সেই নিয়ে নেতৃত্ব এবং সমর্থকদের সঙ্গে বচসা বাধে পুলিশের। বহু দূর পর্যন্ত যানজটও তৈরি হয়। গাড়ির উপর উঠে, সংবিধান হাতে প্রতিবাদও জানান রাহুল। কিন্তু তাঁদের সম্ভলে যেতে দেয়নি পুলিশ। দিল্লি ফেরত পাঠানো হয় গাজিপুর সীমানা থেকে। (Priyanka Gandhi)
এর আগে হাথরস কাণ্ডের সময়ও রাহুল-প্রিয়ঙ্কাকে উত্তরপ্রদেশ যেতে বাধা দেওয়া হয়। এদিন ফের বাধা পেয়ে রাহুল বলেন, "বিরোধী দলনেতা হিসেবে যাওয়ার অধিকার রয়েছে আমার। কিন্তু পুলিশ সম্ভল যেতে দিচ্ছে না। আমি একা যেতেও তৈরি, পুলিশের সঙ্গেও যেতে রাজি। কিন্তু কিছুতেই রাজি হচ্ছে না পুলিশ। কয়েক দিন পর আসতে বলা হচ্ছে। বিরোধী দলনেতা হিসেবে আমার অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে, আমার সাংবিধানিক অধিকারও কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। আমরা শুধু সম্ভল যেতে চাই, কী ঘটেছে জানতে চাই, মানুষজনের সঙ্গে দেখা করতে চাই। অথচ আমার সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। এটাই নতুন ভারত, এখানে সংবিধানের শেষ। অম্বেডকরের সংবিধানকে ধ্বংস করা হচ্ছে। আমরা কিন্তু লড়াই চালিয়ে যাব।"
রাহুলের সঙ্গে সীমানায় বাধা পান প্রিয়ঙ্কাও। তিনি বলেন, "সম্ভলে যা ঘটেছে, অন্যায় ঘটেছে। রাহুল গাঁধী লোকসভার বিরোধী দলনেতা। ওঁর সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে। এভাবে বাধা দেওয়া যায় না। একাও যেতে রাজি রাহুল। কিন্তু উত্তরপ্রদেশ পুলিশ যেতে দিচ্ছে না। পুলিশের কাছে প্রশ্নের উত্তর নেই। হতে পারে উত্তরপ্রদেশের পরিস্থিতি এতটাই খারাপ, সামলে উঠতে পারছে না।" রাহুল এবং প্রিয়ঙ্কাকে সম্ভল যেতে না দেওয়ায় এদিন সংসদে বিক্ষোভ দেখান বিরোধীরাও।
রাহুলকে সম্ভল যেতে দেওয়া হচ্ছে না বলে লোকসভায় সরব হন কংগ্রেস সাংসদ মহম্মদ জাভেদ। সঙ্গে সঙ্গে স্পিকারের আসন থেকে বাধা দেওয়া হয় তাঁকে। সেই সময় স্পিকারের আসনে ছিলেন জগদম্বিকা পাল। তিনি জানান, সংসদের বাইরে বিরোধী দলনেতা কী করছেন, তা নিয়ে আলোচনা করা যাবে না। রাহুলের সংসদে থাকা উচিত ছিল বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এতে বিরোধীরা একযোগে আপত্তি জানান। অনেকে ওয়াক আউটও করেন লোকসভার অধিবেশন থেকে।