মুম্বই: ঘুষ নিয়ে জামিন মঞ্জুর করার অভিযোগ ছিল। কিন্তু এবার নিজেই জামিন পেলেন না দায়রা আদালতের বিচারপতি। মহারাষ্ট্রের সাতারা জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক ধনঞ্জয় নিকমের অন্তর্বর্তী জামিনের আর্জি খারিজ করে দিল বম্বে হাইকোর্ট। ঘুষ মামলায় গ্রেফতারির আশঙ্কা করে আগেভাগে রক্ষাকবচ চেয়ে আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি, কিন্তু হাইকোর্ট সেই আবেদব খারিজ করে দিয়েছে। (Bribery Case Against Judge)
দায়রা আদালতের বিচারক ধনঞ্জয়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে মহারাষ্ট্র দুর্নীতি দমন শাখা (ACB). প্রতারণা মামলায় ৫ লক্ষ টাকা ঘুষের বিনিময়ে তিনি এক অভিযুক্তের জামিন মঞ্জুর করেন বলে অভিযোগ ছিল। সেই নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। গ্রেফতার করা হতে পারে আশঙ্কা থেকে তাই আগেভাগে বম্বে হাইকোর্টে অন্তর্বর্তী জামিনের আর্জি জানান ধনঞ্জয়। কিন্তু সোমবার বিচারপতি এনআর বোরকরের চেম্বার সেই আর্জি খারিজ করে দেয়। (Bombay High Court)
ধনঞ্জয়ের জামিনের আর্জি খারিজ করে আদালত জানায়, বিচার বিভাগের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধেই অভিযোগ বলে রক্ষাকবচ দেওয়া হল না। বিচারপতি বোরকর জানান, তিনি কোনও পক্ষ নিতে আগ্রহী নন। অন্তর্বর্তী জামিন খারিজ করার যথেষ্ট যুক্তিযুক্ত কারণ রয়েছে বলেো জানান। কিন্তু আর কী কী কারমে জামিন বাতিল করা হয়েছে, সেই সংক্রান্ত বিশদ তথ্য এখনও প্রকাশ করা হয়নি।
আদালতে জামিনের শুনানি চলাকালীন, অতিরিক্ত কৌঁসুলি বীর শিন্ডে ধনঞ্জয়কে রক্ষাকবচ দেওয়ার বিরোধিতা করেন। তিনি জানান, ধনঞ্জয়ের বিরুদ্ধে দায়ের মামলার সপক্ষে যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ রয়েছে। অন্য দিকে, ধনঞ্জয়ের আইনজীবী বীরেশ পুরবন্ত জানান, ধনঞ্জয় নির্দোষ। মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হচ্ছে তাঁকে। বীরেশ দাবি করেন, যে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে, তাতে ধনঞ্জয়ের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ কোও প্রমাণ নেই। তিনি ঘুষ চেয়েছেন বা নিয়েছেন বলে জানা যায়নি।
যদিও ধনঞ্জয়ের বিরুদ্ধে দায়ের অভিযোগে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। জানা গিয়েছে, সরকারি চাকরি পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বহু মানুষের থেকে টাকা তোলেন এক সরকারি কর্মী। ওই ব্যক্তি বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রয়েছেন। নিম্ন আদালত তাঁর জামিনের আর্জি খারিজ করে দেয়। তাঁর মেয়ে সাতারা আদালতে নতুন করে জামিনের আদালত জানান, যেখানকার বিচারক ছিলেন ধনঞ্জয়। তাঁর এজলাসেই মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল।
মহারাষ্ট্র দুর্নীতি দমন শাখার আধিকারিকদের দাবি, কিশোর সম্ভাজি খরাট এবং আনন্দ মোহন খরাট নামের দুই ব্যক্তি সরকারি কর্মীর মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে। জানান, ৫ লক্ষ টাকা দিলেই বিচারক ধনঞ্জয় তাঁর বাবার জামিন মঞ্জুর করবেন। তদন্তে নেমে ওই দু'জনের সঙ্গে ধনঞ্জয়ের সংযোগ ধরা পড়ে। এর পর মামলা দায়ের হয়। যদিও ধনঞ্জয়ের আইনজীবীর দাবি, তিনি এসবের কিছুই জানতেন না, জামিন মঞ্জুরও করেননি তিনি।