নয়াদিল্লি: হোয়াটসঅ্যাপে আড়ি পাতার অভিযোগ নিয়ে দেশজোড়া বিতর্কের মধ্যেই এ ব্যাপারে একটি সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটি ২০ নভেম্বরের নির্ধারিত পরবর্তী বৈঠকে আলোচনা করবে বলে সূত্রের খবর। তথ্য ও প্রযু্ক্তি সংক্রান্ত ওই কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুর। কমিটির সদস্যদের লেখা চিঠিতে তারুর ভারতের নাগরিকদের হোয়াটসঅ্যাপে আড়িপাতা, নজরদারির অভিযোগ ‘গভীর উদ্বেগে’র ব্যাপার বলে উল্লেখ করেছেন। ফেসবুক মালিকানাধীন জনপ্রিয় বার্তা আদানপ্রদানকারী অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপ সম্প্রতি জানায়, দুনিয়াব্যাপী পেগাসাস নামে ইজরায়েলের একটি স্পাইওয়্যার কাজে লাগিয়ে বহু মানুষের ওপর চরবৃত্তি চালানো হচ্ছে। এঁদের মধ্যে ভারতের সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মীরাও আছেন। তবে এর পিছনে কারা, নাম করেনি হোয়াটসঅ্যাপ।
সূত্রের খবর, তারুর কমিটির সদস্যদের চিঠিতে আবেদন করেছেন, গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র হিসাবে আমাদের অবশ্যই এটা সুনিশ্চিত করা উচিত যে, আইনবহির্ভূত কারণে বেআইনি উপায়ে ক্ষমতাশালীদের কর্তৃত্বের যে কোনও অপব্যবহার ঠেকানোর যথেষ্ট রক্ষাকবচ থাকবে। গোপনীয়তা রক্ষার অধিকারকে মৌলিক বলে স্পষ্ট স্বীকৃতি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট, এ কথা উল্লেখ করে তারুর বলেছেন, এই অধিকারে হস্তক্ষেপ করে, এমন যে কোনও পদক্ষেপের আইনি বৈধতা, গ্রাহ্যতা ও প্রয়োজনীয়তা খতিয়ে দেখা দরকার।
জনগণের মৌলিক অধিকারের সুরক্ষায় শাসক ও বিরোধী দল, উভয় শিবিরের কমিটি সদস্যদেরই একসঙ্গে কাজ করা উচিত বলে অভিমত জানান তারুর। তথ্য ও প্রযু্ক্তি সংক্রান্ত কমিটির পাশাপাশি নজরদারি’, ‘চরবৃত্তি’র বিষয়টি নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের একটি প্যানেলও তাদের পরের বৈঠকে আলোচনা করবে বলে খবর। কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ এহেন অভিযোগ নিয়ে হোয়াটসঅ্যাপের কাছে রিপোর্ট চেয়েছেন।
হোয়াটসঅ্যাপ ইতিমধ্যেই জানিয়েছে, এনএসও গ্রুপ নামে একটি ইজরায়েলি নজরদার সংস্থার বিরুদ্ধে মামলা করছে তারা। ঘটনাচক্রে নাম-পরিচয় না জানা সংস্থা, কর্তৃপক্ষ যে প্রযুক্তির সাহায্যে অসংখ্য হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীর ফোন হ্যাক করেছে, তার পিছনে রয়েছে এরা।
কংগ্রেস আগেই বিজেপিকে কাঠগড়ায় তুলে দাবি করেছে, বিশেষ বিশেষ লোকজনের ফোনে আড়িপাতার পিছনে হাত রয়েছে কেন্দ্রের শাসক দলের কেননা ওইসব লোকজনের অনেকেই কেন্দ্রের বর্তমান মোদি সরকারের সমালোচক।
কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বলেছেন, আইনের শাসন, গোপনীয়তার মৌলিক অধিকার কেন্দ্রের বর্তমান জমানায় ঠাট্টা-তামাসায় পরিণত হয়েছে। রাজনীতিক, সাংবাদিক, আইনজীবী, নাগরিক অধিকার গোষ্ঠী, মানবাধিকার রক্ষা কর্মীদের ওপর চরবৃত্তি, হ্যাকিংয়ের জন্য অবৈধ ইজরায়েলি স্পাইওয়্যার পেগাসাসকে কাজে লাগানো হয়েছে। এই বেআইনি, অসাংবিধানিক চরবৃত্তি, নজরদারি চক্রকে নিয়োগ করেছে, চালাচ্ছে বিজেপি সরকার। বিজেপি এখন ভারতীয় জাসুস পার্টি।