নয়াদিল্লি: চিন সফর সেরে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আর তার ঠিক পরই চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা করলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে সেখানে তাঁর পাশে দেখা গেল পাক সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকেও। (Russia-Pakistan Relations)
গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে যে জঙ্গি হামলা হয়, তার জন্য মুনির এবং তাঁর উস্কানিমূলক মন্তব্যের দিকে আঙুল তুলেছিল ভারত। মুনিরকে হোয়াইট হাউসে আপ্যায়ন করার জন্য দূরত্ব বাড়ে ভারত ও আমেরিকার মধ্যেও। সেই মুনিরকেই চিনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় দেখা গেল। (China-Pakistan Relations)
বেজিংয়ের 'গ্রেট হলে' শেহবাজ ও জিনপিংয়ের বৈঠকেও উপস্থিত ছিলেন মুনির। একসঙ্গে ছবিও তোলেন তাঁরা। এর পর, পুতিনের সঙ্গে শেহবাজের সাক্ষাতের সময়ও উপস্থিত ছিলেন মুনির। পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী ইশাক দর, অভ্যন্তরীণ বিষয়ক মন্ত্রী মহসিন নকভি, তথ্যমন্ত্রী আত্তা তরারও ছিলেন সেখানে।
জিনপিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে শেহবাজ বলেন, “পাকিস্তান ও চিনের মধ্যে অটুট সম্পর্ক রয়েছে। কোনও শক্তি তা ভাঙতে পারবে না।” মুক্ত বাণিজ্য নিয়ে কথা দুই রাষ্ট্রনেতার মধ্যে। সেখানে চিন-পাকিস্তান দ্বিতীয় অর্থনৈতিক করিডর গড়ার প্রসঙ্গও ওঠে, বরাবর যার বিরোধিতা করে আসছে ভারত। কারণ পাক অধিকৃত কাশ্মীরের উপর দিয়ে গিয়েছে ওই করিডর। বৈঠকে পাকিস্তানের সঙ্গে সুসম্পর্কের কথা তুলে ধরেন জিনপিংও। তাঁকে বলতে শোনা যায়, “চিন এবং পাকিস্তান পরস্পরের বন্ধু। প্রতিকূল সময়ে পাশে থেকেছে যেমন, সৌভ্রাতৃত্ব বজায় থেকেছে। আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, পারস্পরিক বিশ্বাস এবং নৈতিক সততার উপর আমাদের বন্ধুত্ব টিকে রয়েছে। যত পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে গিয়েছে, ততই দৃঢ় হয়েছে এই বন্ধুত্ব।”
এর পর পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাতে ভারতের প্রসঙ্গ তোলেন শেহবাজ। তিনি বলেন, “ভারতের সঙ্গে আপনাদের সম্পর্ককে সম্মান করি। কোনও অসুবিধা নেই। কিন্তু আমরাও আপনাদের সঙ্গে মজবুত সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাই, যা গোটা উপমহাদেশের মঙ্গল, উন্নতি এবং সমৃদ্ধির পথে যা সহায়ক হয়ে উঠবে। গত কয়েক বছরে আমাদের সম্পর্কের উন্নতি হয়েছে। এর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। পাকিস্তান এবং রাশিয়া সঠিক পথে চলছে।”
পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে ইতিবাচক বার্তা দেন পুতিনও। তিনি বলেন, “এশিয়ায় পাকিস্তান আমাদের চিরাচরিত সঙ্গী। এই সম্পর্ককে এগিয়ে যাওয়ার পক্ষপাতী আমরা। বেশ কিছু ক্ষেত্রে সম্পর্কের উন্নতিও হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে বাধাবিপত্তি রয়েছে অবশ্যই। ব্যবসা বাণিজ্যেও ব্যবধান রয়েছে। তবে আমরা বিষয়টি মিটিয়ে নিতে পারব আশাকরি।”