নয়াদিল্লি: দিল্লি বিধানসভার ভোটগ্রহণ আগামীকাল। তার আগে অরবিন্দ কেজরিবাল সরকারের ভূয়সী প্রশংসা শিবসেনার। দলীয় মুখপত্র ‘সামনা’-র সম্পাদকীয়তে উদ্ধব ঠাকরের দল গত ৫ বছর ধরে দিল্লিতে কেজরিবালের আমআদমি পার্টি (আপ) সরকারের ‘দৃষ্টান্তমূলক’ কাজের প্রশংসা করে বলল, কেন্দ্রের মোদি সরকারের দেশের অন্য রাজ্যগুলিতেও ‘দিল্লি মডেলের উন্নয়ন’ প্রয়োগ করা উচিত। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দিল্লিতে দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলি পূরণ করায় কেজরিবালকে সংবর্ধনা দেওয়া উচিত ছিল, কিন্তু তার পরিবর্তে শীর্ষ বিজেপি নেতা, মন্ত্রীরা ভোট বৈতরণী পার হতে ‘হিন্দু বনাম মুসলিম’ ইস্যু তুলছেন।
তারা বলেছে, প্রধানমন্ত্রী মোদি, অমিত শাহ দিল্লি বিধানসভা ভোট জিততে চেষ্টার কসুর করছেন না। মহারাষ্ট্রে বিজেপি ক্ষমতায় আসতে পারেনি, ঝাড়খন্ডে হেরেছে। তাই বিজেপি দিল্লিতে জিততে চায়, এটা অন্যায়ও নয়। এই লক্ষ্য পূরণে দেশের নানা জায়গা থেকে ২০০ সাংসদ, সব বিজেপি-শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা, গোটা কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা দিল্লিতে। তা সত্ত্বেও তাদের পিছনে ফেলে দিয়েছেন কেজরিবাল। কেজরিবালের মতামত, কাজের ধারা নিয়ে মতপার্থক্য থাকতেই পারে, কিন্তু সীমিত ক্ষমতা, কেন্দ্রের বাধা-বিপত্তি ডিঙিয়েই স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নাগরিক পরিষেবায় তাঁর সরকারের ভূমিকা অনুকরণযোগ্য, আদর্শ। প্রধানমন্ত্রী মোদি ও তাঁর মন্ত্রিসভার দেশের অন্য সব রাজ্যে কেজরিবালের দৃষ্টিভঙ্গি কার্যকর করা উচিত। তা না করে কেজরিবালকে ভুল প্রমাণ করার যাবতীয় চেষ্টা চলছে। কেউ কোনও রাজ্যে যদি ভাল কাজ করেন, তবে তিনি আপনার আদর্শ অনুসরণ না করলেও দেশনেতার উচিত তাঁর প্রশংসা করে অন্যত্র সেই ভাল কাজ ছড়িয়ে দেওয়া। কিন্তু এখন আর রাজনীতিতে মহানুভবতা বলে কিছু অবশিষ্ট নেই।
শিবসেনা আরও বলেছে, গরিব ঘরের বাচ্চারা দিল্লির সরকারি স্কুলে পড়াশোনা করছে, এধরনের স্কুল আদর্শ হয়ে উঠেছে। মহল্লা ক্লিনিকগুলো দারুণ কাজ করছে। জল, বিদ্যুতের খরচ তুলে দেওয়া হয়েছে বা কমিয়ে অর্ধেক করা হয়েছে। এর মানে কেজরিবাল যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সেগুলি প্রয়োগ করেছেন।
ভোটপ্রচারে বিজেপি কেজরিবালকে সন্ত্রাসবাদী বলে যে আক্রমণ করেছে, তার পাল্টা শিবসেনার বক্তব্য, ওদের কাছে প্রমাণ থাকলে কেন তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না? বাটলা হাউস, ৩৭০ অনুচ্ছেদ নিয়েও প্রচারে গুরুত্ব দেওয়ায়ও মোদির তীব্র সমালোচনা করেছে শিবসেনা। বলেছে, মোদি তাঁর ভাষণে বলেছেন, যারা সার্জিক্যাল হামলার প্রমাণ চায়, তাদের ভোটবাক্সে শাস্তি দেওয়া উচিত। কিন্তু দিল্লির ভোটাররা তাঁর কথা না শুনলে তাঁদের কি উনি দেশবিরোধী আখ্যা দিয়ে নতুন সরকারকে বরখাস্ত করবেন? বিজেপির প্রধানমন্ত্রীর মর্যাদাকে নীচে নামানো উচিত নয়। প্রধানমন্ত্রীরও উচিত সংযত হওয়া।