ঝাড়গ্রাম: শীতের দুপুর, অন্যান্য দিনের মতোই চলছিল ক্রিকেট ম্যাচ। ক্রিকেট টুর্নামেন্ট তখন জমে উঠেছে। কিন্তু হঠাৎই বদলে গেল চিত্র। হঠাৎ গুলির শব্দে সব চুপ। ঝাড়গ্রামে ক্রিকেট ম্যাচ চলাকালীন শ্যুটআউট। যুবককে গুলি করে খুন করলেন এনভিএফ কর্মী।


কিন্তু কেন এই হামলা? জমি সংক্রান্ত বিবাদের জেরেই হামলা। দাবি নিহত তকবীরের পরিবারের। পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্ত বিশ্বজিৎ গুরুংয়ের বিরুদ্ধে আগেও নানা অপরাধমূলক অভিযোগ রয়েছে। প্রতিবাদে অভিযুক্তের বাড়ি ভাঙচুর করে আগুন জালিয়ে দিল উত্তেজিত জনতা।

মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাকে ঘিরে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠল ঝাড়গ্রামের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাছুরডোবা। তিন দিন আগেই এলাকার ক্রিকেট টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেছিলেন পুলিশ সুপার। এদিন সেখানে ম্যাচ দেখতে গিয়েছিলেন তকবীর আলি। জানা গিয়েছে, তখনই তাঁর উপর চড়াও হন এনভিএফ কর্মী বিশ্বজিৎ গুরুং। অভিযোগ, সার্ভিস রিভলবার দিয়ে যুবককে লক্ষ্য করে গুলি চালান তিনি।

মৃতের বাড়ি ঝাড়গ্রামের রাধানগরে। অভিযুক্তের বাড়ি বাছুরডোবার খেলার মাঠের পাশেই। যুবক গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরই অভিযুক্ত এনভিএফ কর্মীর বাড়িতে চড়াও হন স্থানীয় বাসিন্দারা। ভাঙচুরের পর আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বাড়িতে। স্থানীয় সূত্রে খবর, নিহত এবং অভিযুক্ত দু’জনই জমি কেনাবেচার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। মৃতের আত্মীয় বলেন, পুরনো বিবাদ ছিল, আজ মাঠে খেলা দেখছিল, তখন এই ছেলেটি এসে উত্তেজিত করে, পাত্তা না দিতে পকেট থেকে রিভলবার বের করে গুলি করেন। সার্ভিস রিভলবার বের করে গুলি চালায়।

যাদের দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা, সেই এনভিএফ কর্মীর হাতে যুবক খুনের ঘটনায় ক্ষুব্ধ বিরোধীরা। প্রশাসনের বিরুদ্ধেই ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছে বাম-বিজেপি। ঝাড়গ্রামের সিপিআই নেতা গুরুপদ মণ্ডল বলেন, পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন, বালি-ব্রাউন সুগার নিয়ে ব্যস্ত থাকে, কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ভূমিকা নেই।

পুলিশ সূত্রে খবর, প্রথম গুলিটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ায়, পালাতে যান যুবক। এরপর ফের তাঁকে গুলি করা হয়। যুবকের মাথায় গুলি লাগে। অভিযোগ, গুলি করার পর ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়। গুরুতর জখম অবস্থায় প্রথমে ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় যুবককে। সেখান থেকে কলকাতার এসএসকেম-এ রেফার করা হয়। কিন্তু পথেই মৃত্যু হয় ৩২ বছরের তকবীরের। ঘটনার নিন্দা করলেও, পুলিশি তদন্তের উপরই ভরসা রাখছে তৃণমূল। এখনও পলাতক অভিযুক্ত এনভিএফ কর্মী।