নয়াদিল্লি: শরীর তেমন ভাল যাচ্ছে না বলে খবর আসছিল বেশ কিছু দিন ধরেই। যুদ্ধ সামাল দিতে গিয়ে তিনি হিমশিম খাচ্ছেন বলেও শোনা যাচ্ছিল। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর সামনে এল (Vladimir Putin)। সূত্র মারফত দাবিই নয়, বিধ্বস্ত অবস্থায় পুতিন মাটিতে পড়ে রয়েছেন, এমন ছবিও ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেই নিয়ে শোরগোলের মধ্যেই আসল সত্য় সামনে এল। (Vladimir Putin Heart Attack Claims)
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় পুতিনের ছবি-সহ ওই খবর ছড়িয়ে পড়ে। রাশিয়ার জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম 'দ্য মস্কো টাইমস'-এর শীর্ষক-সহ ওই ছবি দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। ছবিতে দেখা যায়, প্রথমে মাটি ধরে বসে রয়েছেন পুতিন। ধুঁকছেন তিনি। তার পর ভারসাম্য না রাখতে পেরে মাটিতে মুখ থুবড়ে পড়ে রয়েছেন তিনি। পুতিন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন বলে দাবি করা হয় তাতে।
বিষয়টি সামনে আসতেই শোরগোল পড়ে যায় সর্বত্র। এক বছরের বেশি সময় ধরে ইউক্রেনের সঙ্গে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ এবং অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞায় রাশিয়া নাগপাশে বাধা পড়েছে, সেই ধাক্কা সামলাতে না পেরেই পুতিন ধরাশায়ী হয়েছেন বলে শুরু হয়ে যায় জল্পনা-কল্পনা। বিশ্বের একাধিক সংবাদমাধ্যম সেই নিয়ে খবরও ছেপে দেয়। কিন্তু খবরের সত্যতা যাচাই করতে গিয়ে উঠে আসে আসল তথ্য।
এই ছবি ঘিরেই শোরগোল বাধে।
পুতিনের ওই ছবি এবং তাঁকে নিয়ে ওই খবর সামনে আসতেই সত্যতা যাচাইয়ে নেমে পড়েন কৌতূহলী কিছু মানুষ জন। তাতে গোড়াতেই খটকা লাগে জাপানের এক কৃত্রিম যন্ত্রমেধা বিশেষজ্ঞের। মেঝেতে বিছনো কার্পেট থেকে পুতিনের মুখের পেশি, তাঁর চাহনিকে খুঁত পান তাঁরা। শুধু তাই নয়, যে স্ক্রিনশটকে রুশ সংবাদমাধ্যমের ছাপা খবর বলে তুলে ধরা হয়েছে, তাতে চলতি বছরের ১২ মে লেখা থাকতে দেখা যায়। ওই দিনে সংবাদমাধ্যমটি আদৌ ওই খবর ছেপেছিল কিনা, শুরু হয় তদন্ত। তাতে দেখা যায়, তেমন কোনও খবরই ছাপা হয়নি।
এর পর ওই ছবি নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করলে দেখা যায়, এ বছর ২২ মার্চ ওই একই ছবি ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ক্রেমলিনে বৈঠক চলাকালীন পুতিন অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে দাবি করা হয়েছিল সেবার।পরে জানা যায়, ওই ছবিটি আসলে কৃত্রিম যন্ত্রমেধাকে কাজে লাগিয়ে বানানো হয়েছিল।
মিশা পেত্রভ নামের জনৈক ট্যুইটার ব্যবহারকারীও পুতিনের ওই ছবির সত্যতা ব্যাখ্যা করেন। জানান, Midjourney নামের একটি AI অ্যাপ ব্যবহার করে পুতিনের ওই ছবি বানানো হয়েছে। হাতে হাতকড়া পরিয়ে পুতিনকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, এমন আরও একাধিক ছবিও ওই অ্যাপ মারফত তৈরি করা হয় বলে তুলে ধরেন।
AI-এর ফাঁদে পা দেওয়ার ঘটনা এই প্রথম নয় যদিও। কিছু দিন আগে আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাতে হাতকড়া পরা একটি ছবিও সামনে আসে। আমেরিকার পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেছে বলে দাবি ওঠে। পরে দেখা যায়, সেই ছবিও কৃত্রিম উপায়ে তৈরি।