নয়াদিল্লি: প্রেমিকাকে ছ'-ছ'বার ধর্ষণ। বন্দি করে রেখে নিদারুণ অত্যাচার। প্রমাণের অভাবে নিষ্কৃতি পেয়েই যাচ্ছিল প্রেমিক। কিন্তু বাড়িতে রাখা ওয়াশিং মেশিনই শেষ পর্যন্ত অপরাধ প্রমাণ করে দিল। সেই প্রমাণ আদালতে গৃহীত হয়েছে। কারাবাসে পাঠানো হয়েছে ওই যুবককে। ধর্ষণ, শারীরিক নির্যাতন এবং প্রেমিকাকে বন্দি করে রেখে অত্যাচার চালানোর ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। সাত বছরের জেল হয়েছে যুবকের। (Washing Machine Captures Assault)
দক্ষিণ কোরিয়া থেকে এই ঘটনা সামনে এসেছে। গত বছর মার্চ-এপ্রিল নাগাদ ঘটনাটি ঘটে। সেই থেকে মামলা চলছিল এতদিন। যুবক অপরাধী জেনেও কিছু করতে পারছিল না পুলিশ। কিন্তু কয়েক মাস আগে বাড়িতে রাখা ওয়াশিং মেশিনটি থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যপ্রমাণ হাতে আসে তাদের। আর তাতেই ২৪ বছর বয়সি ওই যুবককে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। তাকে কারাবাসের সাজা শোনানো হয়। (South Korea News)
জানা গিয়েছে, এক তরুণীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিল ওই যুবকের। কিন্তু যুবকের অতীত সম্পর্কে কিছু তথ্য হাতে পান ওই তরুণী। প্রাক্তনের খোলামেলা ছবি এবং ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ভিডিও যুবকটি নিজের কাছে রেখে দিয়েছিল বলে জানতে পারেন। আরও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, এক প্রাক্তন প্রেমিকাকে ধর্ষণে অভিযুক্ত ওই যুবক। অত্যাচারের ভিডিও ভাইরাল করে দেওয়ার হুমকিও দেয়। শুধু তাই নয়, এক নাবালিকার সঙ্গে সঙ্গমে লিপ্ত হওয়ার অভিযোগও রয়েছে যুবকের বিরুদ্ধে।
সব জেনে ওই তরুণী সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে যেতে চাইছিলেন। সেকথা যুবককে জানাতেই বিপত্তি বাধে। ওই তরুণীকে বাড়িতে বেশ কয়েক ঘণ্টা বন্দি করে রাখে সে। সেই অবস্থায় নিদারুণ অত্যাচার চালিয়ে যায়। তরুণীকে ছ'-ছ'বার ধর্ষণ করে সে। ছাড়া পেয়ে ওই তরুণী থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু যুবকের বিরুদ্ধে কিছুতেই তথ্যপ্রমাণ হাতে পাচ্ছিল না পুলিশ।
ওই তরুণী একটি ৩৯ মিনিটের সিসি ফুটেজও পুলিশের কাছে জমা দেন। ভিডিও ফুটেজে, দু'জনকে একসঙ্গে দেখা গেলেও, অত্যাচারের কোনও মুহূর্তে তাতে ধরা পড়েনি।এতেবারে হতোদ্যম হয়ে যখন হাল ছেড়ে দেওয়ার মুখে তদন্তকারীরা, ঠিক সেই সময়ই ঘরে রাখা ওয়াশিং মেশিনের দরজাটিতে নজর পড়ে তাঁদের। দেখা যায়, উল্টো দিকে তরুণীর উপর হওয়া অত্যাচারের মুহূর্ত ওয়াশিং মেশিনের প্লাস্টিকের ঢাকনায় প্রতিফলিত হচ্ছে।
তড়িঘড়ি সেউই ফুটেজ আদালতে জমা দেয় পুলিশ। আদালত সেটিকে প্রমাণ হিসেবে গ্রহণ করে। এর পর আর বেরনোর রাস্তা পায়নি ওই যুবক। লাগাতার অভিযোগ অস্বীকার করলেও, ফুটেজ দেখে দোষ স্বীকার করে নেয় সে। তাকে সাজা শোনাতে গিয়ে আদালত বলে, "শুধু জঘন্য অপরাধই ঘটানো হয়নি, তদন্তকারীদের চোখে লাগাতার ধুলো দিয়ে গিয়েছেন উনি। নির্যাতিতার উপর চাপ সৃষ্টি করেছেন। এক্ষেত্রে কঠোর সাজা হওয়া উচিত।" প্রথমে আট বছরের সাজা শোনানো হয় যুবককে। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানানো হলে আদালত তাকে সাত বছরের সাজা শোনায়।