নয়াদিল্লি: মৌর্যবংশ, সম্র্রাট অশোক, কলিঙ্গ যুদ্ধ, শ্রীলঙ্কায় বৌদ্ধধর্মের শান্তিবার্তা! ইতিহাসের সেই পর্বই যেন জীবন্ত হল দুই ছবিতে যা হালেই ভারতের হাতে হালেই তুলে দিয়েছে শ্রীলঙ্কা।


খ্রিস্টপূর্ব ২৬৮-২৩২ সালের মাঝামাঝি বা শেষের দিকে একটা সময়। তৎকালীন ভারত ভূখণ্ডের একটি বড় অংশে তখন মৌর্য রাজবংশের শাসন। সিংহাসনে রাজা অশোক। ততদিনে কলিঙ্গে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হয়ে গিয়েছে। যুদ্ধের বীভৎসতায় কেঁপে উঠেছিল রাজার মন। শান্তির পথে পা বাড়িয়েছিলেন রাজা। বৌদ্ধধর্মের আশ্রয় নিয়ে হয়ে উঠেছিলেন ধর্মাশোক। সেই প্রাচীনকালেই বৌদ্ধধর্মের শিক্ষা ছড়িয়ে দিতে দক্ষিণে পাঠিয়েছিলেন তাঁর এক পুত্র মহেন্দ্র এবং কন্যা সঙ্ঘমিত্রাকে। ইতিহাস বলে, তাঁরা পৌঁছেছিলেন অধুনা শ্রীলঙ্কায়। তাঁদের সাদরে গ্রহণ করেছিলেন শ্রীলঙ্কার রাজা। ইতিহাসের সেই সন্ধিক্ষণ ছবিতে বাঁধা পড়েছে। আসল দুটি চিত্র রয়েছে শ্রীলঙ্কার কলম্বোর কাছে একটি মন্দিরে। তারই দুটি রেপ্লিকা ভারতের হাতে তুলে দিল শ্রীলঙ্কা।


শ্রীলঙ্কার উপহার:
গত শনিবার নয়াদিল্লিতে ন্যাশনাল গ্যালারি অফ মডার্ন আর্টে সংস্কৃতি এবং বিদেশ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী মীনাক্ষি লেখির হাতে ওই দুটি ছবি তুলে দেন ভারতে শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রদূত মিলিন্দা মোরাগোদা। তাঁর সঙ্গে ছিলেন শ্রীলঙ্কার বরিষ্ঠ এবং সবচেয়ে সম্মানীয় বৌদ্ধ ধর্মগুরুরা। 


ভারতে ২ দিন ধরে গ্লোবাল বুদ্ধিস্ট শীর্ষবৈঠক চলছিল। যা শুক্রবার শেষ হয়েছে। তারপরেই এই অনুষ্ঠান। ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গ্লোবাল বুদ্ধিস্ট শীর্ষবৈঠকে উপস্থিত শ্রীলঙ্কার প্রতিনিধিরা এবং মহাবোধি সোসাইটির প্রতিনিধিরা। অনুষ্ঠানের পরে মন্ত্রী মীনাক্ষি লেখি একটি ভোজসভারও আয়োজন করেন।


 



ভারত ও শ্রীলঙ্কার সম্পর্ক বহু প্রাচীন। দুই পড়শি দেশের মধ্যে পারস্পরিত সম্পর্কের একাধিক মাত্রা থাকে। ভারতীয় উপমহাদেশ অঞ্চলে পড়শি দেশগুলির মধ্যে ভাষা, লোক-সংস্কৃতি, ধর্ম-সহ আরও একাধিক বিষয় বহু প্রাচীন যোগাযোগ রয়েছে। যেমন ভারত ও শ্রীলঙ্কার সম্পর্ক। মন্ত্রী একটি ট্যুইটে জানিয়েছেন এই ছবি উপহার ভারত ও শ্রীলঙ্কার কূটনৈতিক সম্পর্কের ৭৫তম বর্ষপূর্তির একটি অংশ। সংবাদসংস্থা সূত্রের খবর, মীনাক্ষি লেখি দুই দেশের সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক যোগাযোগের কথা বলেছেন এবং সেই সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার কথা বলেছেন। বৌদ্ধধর্মকে মাঝে রেখে দুই দেশের সম্পর্কের ভিত আরও পোক্ত করার কথাও বলেছেন। সংবাদ সংস্থা সূত্রের খবর, মন্ত্রীর এই কথায় তাঁরা অত্যন্ত খুশি বলে জানিয়েছেন শ্রীলঙ্কার প্রতিনিধিদল।


আরও পড়ুন: ছোটবেলায় বাদামি, বড় হলেই গায়ের রং সাদা! চেনা পাখির অচেনা তথ্য়