কমলকৃষ্ণ দে, পূর্ব বর্ধমান: পূর্ব বর্ধমানের ভাতারে দুঃস্থ করোনা আক্রান্তদের পাশে ভাতারের স্কুল শিক্ষক। বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছেন পুষ্টিকর খাবার ও নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী। বিলি করছেন মাস্ক ও স্যানিটাইজারও। সমাজ গড়ার দায়িত্ব পালনের সঙ্গে সঙ্গে, সমাজ সেবাতেও ব্রতী ইনি। নিজের বেতনের টাকায় দুঃস্থ করোনা রোগীদের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছেন খাদ্য সামগ্রী! নাম শেখ জানে আলম। পেশায় পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের বড়কালী অবৈতনিক প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ায় হু হু করে বাড়তে শুরু করে সংক্রমণ। তখনই কোভিড আক্রান্ত দুঃস্থ পরিবারগুলির পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন বছর ৩৪-এর এই শিক্ষক।


কোনও পরিবারের কারোর কোভিড পজিটিভ রিপোর্ট জানলেই সংক্রমণের ভয়ে তাঁদের বাড়ির ত্রিসীমানা দিয়ে যাচ্ছেন না প্রতিবেশীরা । এদিকে আক্রান্ত পরিবারটি হোম আইসোলেশনে থাকায় নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ও ওষুধপত্র সংগ্রহ করতে গিয়ে তাঁদের বিপাকে পড়তে হচ্ছে । সব থেকে বেশি বিপাকে পড়তে হচ্ছে দিন আনা দিন খাওয়া পরিবারগুলিকে। একদিকে রুজি রোজগার বন্ধ, তার উপর পরিবারের কেউ করোনা সংক্রমিত হলে দু’বেলা খাবার জোটাতে গিয়ে কার্যত হিমসিম খেতে হচ্ছে । ওই সমস্ত অসহায় পরিবারগুলির কথা কানে যেতেই তাঁদের পাশে ত্রাতা হয়ে দাঁড়াচ্ছেন পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার থানার রাধানগর গ্রামের বাসিন্দা প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক শেখ জানে আলম। দুঃসময়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানো স্কুল শিক্ষক শেখ জানে আলম বলেছেন, 'আমি সরকারি বেতন পাই। এখনতো স্কুল বন্ধ। এই অতিমারীর সময় বেতনের একটা অংশ থেকে করোনা আক্রান্তদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি।'


প্রতিদিনই পিপিই কিট পড়ে হোম আইসোলেশনে থাকা, দিন আনা দিন খাওয়া কোভিড রোগীদের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছেন নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ও খাবার। মেনুতে থাকছে মুরগির মাংস, দুধ, ডিম। আক্রান্ত পরিবারের হাতে তুলে দিচ্ছেন ওষুধ, মাস্ক ও স্যানিটাইজারও। 'মাস্টারমশাই'-এর হাত থেকে মাস্ক, স্যানিটাইজ, খাবার পেয়ে আপ্লুত করোনা রোগীরা। সঙ্কটের মুহূর্তে স্কুল শিক্ষকের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন এলাকাবাসীরা। মানব সভ্যতা যখন সঙ্কটে, তখন আক্ষরিত অর্থে মানবতার ধর্ম পালন করে চলেছেন ভাতারের এই স্কুল শিক্ষক।