বিটন চক্রবর্তী, সৌভিক মজুমদার, পূর্ব মেদিনীপুর: অনলাইন গেমের নেশা এতটাই চরমে পৌঁছেছিল যে, পরিবারের সদস্যকে খুন করল যুবক। জানা গিয়েছে, অনলাইন গেম খেলা নিয়ে বকাবকি করায় দাদাকে ‘কুপিয়ে খুন’ করে এক যুবক। পাশাপাশি মা-কেও কুপিয়ে খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে ওই যুবকের বিরুদ্ধে।
শেষ নয় এখানেই, এর পরে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে অভিযুক্ত যুবক নিজে, পরে মৃত্যু হয়েছে তাঁরও। মৃতেরা হলেন সূর্যকান্ত মণ্ডল ও চন্দ্রকান্ত মণ্ডল। আশঙ্কাজনক অবস্থায় অভিযুক্ত যুবকের মা হাসপাতালে ভর্তি। রবিবার ভোরে ঘটনাটি ঘটেছে চণ্ডীপুর থানার সুলতানপুরে। ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
ছবিটা নতুন নয়, একটু অবসর মানেই হাতে মোবাইল ফোন আর ভিডিও গেম। ভার্চুয়াল দুনিয়া কার্যত নেশায় পরিণত হয়েছে শিশু-কিশোরদের। একটা পর্যায় শেষ করলেই আর একটা পর্যায়ের হাতছানি। আর এই মারাত্মক নেশার ফল কতটা মারাত্মক হতে পারে তা প্রমাণ করল পূর্ব মেদিনীপুরের একটি ঘটনা।
রাত জেগে গেম খেলতে বাধা দিয়েছিলেন মা ও দাদা। বকাবকি করেছিলেন। তার জেরে দু’জনকেই ধারাল অস্ত্রের কোপ যুবকের। হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে দাদার, এখন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন মা। ঘটনায় উদ্বিগ্ন মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ভগবানপুরে মোটরবাইক সারানোর কাজ করতেন চন্দ্রকান্ত। লকডাউনে কাজ চলে যাওয়ার পর আসক্ত হয়ে পড়েন অনলাইন গেমে। রাত জেগে গেম খেলা নিয়ে দাদা ও মায়ের সঙ্গে তাঁর প্রায়ই অশান্তি হত। অভিযোগ, দাদাকে মারধরও করতেন ভাই।
আদিত্য ঘটক নামে ওই পরিবারের এক আত্মীয়ের কথায়, 'গেমে আসক্ত ছিল। পিসি ও দাদা বকাবকি করতে মারধর করে। কাল রাতে এই ঘটনা। রবিবার ভোর রাতে অশান্তি চরমে ওঠে। পুলিশ সূত্রে খবর, দাদা ও মা বকাবকি করায় ধারাল অস্ত্র নিয়ে চড়াও হন চন্দ্রকান্ত। অস্ত্রের কোপে ঘটনাস্থলেই মারা যান দাদা। আহত হন মা।
কিছুক্ষণ পরে বাড়ি থেকে দূরে অচৈতন্য অবস্থায় পাওয়া যায় চন্ত্রকান্তকে। হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিত্সকরা। পুলিশের অনুমান, মা-দাদার ওপর হামলা চালানোর পর বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন চন্দ্রকান্ত। হাসপাতালে চিকিত্সা চলছে মায়ের। ঘটনায় মনোরোগ বিশেষজ্ঞ সব্যসাচী মিত্রের মন্তব্য, অভিভাবকদের এখনই সতর্ক হতে হবে। না হলে আরও বাড়বে বিপদ।