কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, অর্ণব মুখোপাধ্যায় ও রুমা পাল, কলকাতা: বছর ঘুরলেই রাজ্যে বিধানসভা ভোট! সেই লড়াইয়ে কংগ্রেস বামেদের সঙ্গে জোট বেঁধে লড়াই করবে বলে ঘোষণা করে দিলেন অধীর চৌধুরী। ফের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হওয়ার পর শুক্রবার প্রথম এরাজ্যের কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করেন অধীর।
সূত্রের খবর, বৈঠকে সংগঠন নিয়ে যেমন আলোচনা হয়েছে, তেমন এটাই ঠিক হয়েছে যে, এখন থেকে যে কোনও কর্মসূচি বামেদের জানিয়ে এবং একসঙ্গে করতে হবে।


কিছুদিন আগে সনিয়া গান্ধী যেভাবে নিট নিয়ে ভার্চুয়াল বৈঠক পরিচালনার রাশ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে তুলে দিয়েছিলেন, তাতে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা তৈরি হয়, তাহলে কি কাছাকাছি আসতে পারে কংগ্রেস-তৃণমূল? কিন্তু, এর কিছুদিনের মধ্যেই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদে বসানো হয় অধীর চৌধুরীকে। যিনি কট্টর মমতা বিরোধী এবং বামেদের সঙ্গে জোটের পক্ষপাতী। পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, এই সিদ্ধান্তের মধ্যে দিয়েই কংগ্রেস হাইকম্যান্ড কার্যত বুঝিয়ে দেয় যে, বামেদের সঙ্গেই কংগ্রেসের জোটে সম্মতি রয়েছে তাঁদের। এদিন অধীরের গলাতেও শোনা গিয়েছে সেই সুর। তিনি বলেছেন, দিল্লি কোনও বাধা নয়। জোট হচ্ছে এবং হবেই। আগেও হয়েছে। দিল্লি বাধা হলে আমি কী বলতাম? আমি তো দিল্লিরই প্রতিনিধি। দিল্লিই তো আমাকে প্রদেশ সভাপতি করেছে। সেইজন্যই তো বলছি জোট হবে।

কংগ্রেসের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে বামেরা। রাজ্য বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু লিখেছেন,আমাদের স্লোগানই হচ্ছে টিএমসি-বিজেপি বিরোধী সব শক্তির সঙ্গে বোঝাপড়া করতে হবে। বিজেপি ও টিএমসি নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রেখে পলিসি তৈরি করে। রাজ্যে বাম-কংগ্রেস মিলিত লড়াই করতে চায়। নির্বাচনেও তা হবে। কংগ্রেসের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই।
বাম-কংগ্রেসের জোট নিয়ে তৃণমূল-বিজেপির গলায় কটাক্ষের সুর। তৃণমূল নেতা তথা পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বাম-কংগ্রেস জোট নিয়ে কটাক্ষ করেছেন।

২০১৬ সালে অধীর চৌধুরী প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি থাকাকালীনই জোট করে ভোটে লড়েছিল বাম-কংগ্রেস। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে জোট ভেস্তে যায়। ২০২১-এর বিধানসভা ভোটে কি জোট করে দাগ কাটতে পারবে বাম-কংগ্রেস? সেটাই দেখার।