কলকাতা: স্বাধীনতা দিবস কী ভাবে পালন করা হবে তা নিয়ে রাজ্যের স্কুলগুলির হাতে থাকছে পূর্ণ স্বাধীনতা। সোমবার, স্পষ্ট করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। টুইটারে তাঁর বার্তা, রাজ্যের স্কুলগুলি নিজেদের মতো করে স্বাধীনতা দিবস পালন করছে। বাংলায় প্রত্যেকের স্বাধীনতা দিবস পালনের পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে।
সূত্রের খবর, মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের তরফে দু’দফায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কী ভাবে স্বাধীনতা দিবস পালন করতে হবে তা বিস্তারিত ভাবে জানানো হয়। প্রভাত ফেরি থেকে কুইজ প্রতিযোগিতা, অভিভাবক বৈঠক থেকে দেশাত্মবোধক গানের মতো বিভিন্ন অনুষ্ঠান করার কথা বলা হয় তাতে।
আরেকটি নির্দেশিকায় বলা হয়, এ বছর সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গরিবি, দুর্নীতি, সাম্প্রদায়িকতা এবং জাতপাত থেকে মুক্ত হওয়ার সঙ্কল্প নিতে হবে। এর পাশাপাশি, সর্বশিক্ষা মিশনও রাজ্যের স্কুলগুলিকে নির্দেশিকা পাঠায়। তাতে বলা হয়, স্বাধীনতা দিবসে স্কুলে স্কুলে হবে শিক্ষার অধিকার আইনের উপর আলোচনা, বিতর্ক, ক্যুইজ, রচনা লেখা। গোটা অনুষ্ঠানটির ছবি ও ভিডিও তুলে ৩১ অগাস্টের মধ্যে জমা দিতে হবে।
কেন্দ্রের প্রস্তাব তো বটেই, সর্বশিক্ষা মিশনের পাঠানো নির্দেশিকাও খারিজ করে দিয়েছে রাজ্য সরকার। স্পষ্ট করে দিয়েছে, স্কুলে স্কুলে স্বাধীনতা দিবস পালনের ছবি বা ভিডিওগ্রাফির প্রয়োজন নেই। আগের বছরগুলিতে যে ভাবে স্বাধীনতা দিবস পালন হত এবার রাজ্যের স্কুলগুলিতে সেভাবেই হবে। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, স্কুলগুলির স্বাধীনতা রয়েছে যে ভাবে পালন করে সেভাবেই করবে। ২ লক্ষ স্কুলকে কী বাবে বলব ভিডিওগ্রাফি করো। চাবুক দিয়ে দেশপ্রেম আনা যায় না।
[embed]https://twitter.com/MamataOfficial/status/897070807414743040[/embed]
https://twitter.com/MamataOfficial/status/897070706004865024
এ নিয়ে মুখ খুলেছেন রাজ্যপাল। কেশরীনাথ ত্রিপাঠী বলেন, হৃদয় থেকে স্বাধীনতা পালন। এই বিতর্কে বিজেপি অবশ্য তৃণমূল সরকারকে নিশানা করতে ছাড়ছে না। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, কেন্দ্রের নির্দেশিকা পালন করবে না বলে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার তা কি দেশদ্রোহিতা নয়?
এর পাল্টা জবাব দিয়েছে তৃণমূল। শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, দিলীপবাবুদের বুদ্ধি আছে!!!মিথ্যাচার ওদের কালচার। স্কুলগুলিকে বলে দিয়েছে, যে ভাবে ওরা পালন করে, সেভাবেই করবে।
রাজ্যের স্কুলে স্কুলে পাঠানো সর্বশিক্ষা মিশনের নির্দেশিকা ঘিরে ক’দিন ধরেই বিতর্ক চলছে। অনেকেই প্রশ্ন তোলেন, স্বাধীনতা দিবস পালনের কেন ছবি ও ভিডিগ্রাফি করতে হবে? এভাবে কি দেশপ্রেমের প্রমাণ দিতে হবে? রাজ্যের স্কুল গুলিতে কী ভাবে স্বাধীনতা দিবস পালন হবে সেটাই বা কেন কেন্দ্রীয় সরকার বলে দেবে?
এরপরই পুরনো নির্দেশিকা বাতিল করে জারি হয় নয়া নির্দেশিকা। তাতে বলা হয়, শিক্ষার অধিকার আইনের ওপর আলোচনা, রচনা লেখা, তাৎক্ষণিক বক্তৃতা, বিতর্ক, ক্যুইজের মতো অনুষ্ঠান বাতিল করা হচ্ছে। যেভাবে এতদিন হয়ে এসেছে সেভাবেই স্বাধীনতা দিবস পালন করা হবে।
এই বিতর্কের আবহের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর টুইট এবং শিক্ষামন্ত্রীর বার্তায় ফের স্পষ্ট করা হল, আর পাঁচটা বছর যে ভাবে রাজ্যের স্কুলগুলিতে স্বাধীনতা দিবস পালন হয়ে আসছে, এবারও সে ভাবেই হবে।