কলকাতা ও নয়াদিল্লি: বৃহস্পতিবার বিজেপির লালবাজার অভিযান। আর সে দিনই বিকেলে দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করবেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এর আগে গত ১০ই এপ্রিল নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বৈঠকেও রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্পে বকেয়া কেন্দ্রীয় বরাদ্দ মেটানোর জন্য বলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু, এ বার যে প্রেক্ষাপটে, মোদী-মমতা বৈঠক হতে চলেছে, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজে অবশ্য দাবি করেছেন, রাজ্যের উন্নয়ন নিয়েই এই বৈঠক।
পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, মমতার এই বৈঠক-কৌশলের জেরে, রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব বিড়ম্বনায় পড়ে গিয়েছে। কারণ, যে দিন তারা লালবাজার অভিযান নিয়ে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে বাংলায় ঝাপাবে, সেদিনই দিল্লিতে, নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও, রাজ্যের বিজেপি নেতারা প্রকাশ্যে এই তত্ত্ব মানতে নারাজ।
দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, উন্নয়নের জন্য এরকম বৈঠক আগেও হয়েছে। কিন্তু এর জন্য তৃণমূলের বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলনে কোনও ভাঁটা পড়বে না।
একদিকে, বিজেপির লালবাজার অভিযান। আবার সে দিনই মোদী-মমতা বৈঠক। এতে, বাম-কংগ্রেস ফের গট-আপের গন্ধ পাচ্ছে। বহরমপুরের কংগ্রেস বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তী বলেন, একই বৃন্তে দুটি কুসুম হলেন দিদি আর মোদী। বামফ্রন্ট পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, নিশ্চয়ই ডাল মে কুছ কালা হ্যায়। সরকারি বিষয় হলে তো অর্থমন্ত্রী যেতেন।
তৃণমূল অবশ্য এই সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পাল্টা দাবি, আমরা চিরকাল সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াই করে এসেছি। কোনও দিন মাথা নত করিনি। সেই লড়াই চালিয়ে যাব। বাম-কংগ্রেসের কোনও কর্মসূচি নেই। আমরা যখন বিজেপির বিরোধিতা করি, তখনও বলে কেন করছি। আবার এরাই শহিদ মিনারে বিজেপিকে হাত ধরে ডেকে এনেছিল।
আসন্ন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে এখন দিল্লি সরগরম। শুক্রবার বিরোধী দলগুলি বৈঠকেও বসছে। তার আগে, বৃহস্পতিবার, মোদী-মমতার বৈঠকেও, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের বিষয়টি উঠে আসতে পারে। এ ছাড়া, আলোচনা হতে পারে পণ্য পরিষেবা কর বা জিএসটি নিয়েও।
আগামী ১ জুলাই থেকে দেশজুড়ে জিএসটি লাগু হওয়ার কথা। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ সরকার আরও কিছুটা সময় চায়। রাজ্যের দাবি, বাংলার ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা এখনও এই ব্যবস্থার জন্য প্রস্তুত নন। জিএসটি চালুর সময়সীমা পিছনোর আর্জি জানিয়ে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীকে চিঠিও পাঠিয়েছেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীও এই প্রসঙ্গ তুলতে পারেন বলে ধারণা পর্যবেক্ষকদের একাংশের।