কৌশিক গাঁতাইত, আসানসোল: ফের বিতর্কে বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি। এবার তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠল আসানসোলের মেয়র থাকাকালীন কোটি কোটি টাকা বকেয়া রাখার। জিতেন্দ্র তিওয়ারির আমলে বাকি রাখা টাকার হিসেব পেতে তদন্ত শুরু করল আসানসোল পুরসভা। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই সরগরম রাজনৈতিক মহল।
বর্তমান বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে পুরপ্রশাসক অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ করেছেন যে, আসানসোলের মেয়র পদ থেকে পদত্যাগ করার সময় প্রায় পাঁচশো পঞ্চান্ন কোটি টাকা বাকি রেখে গিয়েছেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি। বর্তমান বিজেপি নেতার রেখে যাওয়া এই বকেয়া টাকা মেটাতে গিয়েই থমকে যাচ্ছে আসানসোলের উন্নয়নের কাজ।
জিতেন্দ্র তিওয়ারির বাকি রাখা কোটি কোটি টাকা প্রসঙ্গে অমরনাথ বাবু আরও বলেন, 'মেয়র থাকাকালীন যে ৫৫৫ কোটি টাকা তিনি বকেয়া রেখেছেন, সেই টাকা মেটাতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাদের। ইতিমধ্যেই প্রায় সাড়ে ১২ কোটি টাকা মেটাতে হয়েছে। কিন্তু এভাবে এত টাকা মেটাতে গিয়ে থমকে যাচ্ছে আসানসোলের উন্নয়নের কাজ। রবীন্দ্রভবন সংস্কার এবং সৌন্দর্যায়নের কাজের জন্য ৯ কোটি টাকা মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে ঠিক কথা। কিন্তু রবীন্দ্র ভবনের পাশেই কফি হাউস তৈরির জন্য প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। সেই টাকাও তিনি বাকি রেখে গিয়েছেন পদত্যাগ করার সময়। আমরা নিশ্চিত যে এর পিছনে অন্য কোনও রহস্য রয়েছে। কী কারণে জিতেন্দ্র তিওয়ারি এত টাকা বাকি রেখেছেন, সেই ঘটনার সঠিক তদন্ত হওয়া দরকার। আর সেই ঘটনার তদন্ত ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়েছে আসানসোল পুরসভা। গঠন করা হয়েছে তদন্ত কমিটিও।'
যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগই নস্যাৎ করে দিয়েছেন আসানসোলের প্রাক্তন মেয়র এবং বর্তমান বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি। পুরপ্রশাসক অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়ের করা অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'আমার বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ ভুয়ো। তদন্ত কেউ করতেই পারেন। উনি ভুলে যাচ্ছেন যে, যখন আমি মেয়র ছিলাম, তখন উনি চেয়ারম্যান ছিলেন। তাই যা কিছু হয়েছে বা যা কাজের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সেই সমস্ত কাগজেই ওঁর সাক্ষর রয়েছে। তখন কেন উনি এসব কথা বলেননি। আমি কর আদায়ে জোর দিয়ে অর্থ সংগ্রহ করেছিলাম উন্নয়নের কাজের জন্য। আর তাছাড়া কর্পোরেশনের কাজ দেখার জন্য সরকারি অফিসাররা রয়েছেন। তাঁরা তদন্তের জন্য যেটা ভালো বুঝবেন, করবেন।'
জিতেন্দ্র তিওয়ারি আরও বলেন, 'অতীতে বোর্ড মিটিংয়ে যে সমস্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, তার সব কিছুতেই ওঁর সাক্ষর রয়েছে। আসানসোলের উন্নয়নের জন্য আমি বহুবার কলকাতার সঙ্গে লড়াই করে আর্থিক প্রয়োজনের দাবি জানাতাম। তাই উনি যদি তদন্ত করতে চান, তাহলে আগে নিজের বিরুদ্ধে তদন্ত করুন।'