পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া: হাজার হাজার ভুয়ো সিম কার্ডের ভিত্তিতে ই ওয়ালেট তৈরী করে দেশ জুড়ে প্রতারণা চক্রের পর্দা ফাঁস। বাঁকুড়ায় এই ঘটনায় গ্রেফতার করা হল ৬ জনকে। তাঁদের থেকে  উদ্ধার করা হয়েছে প্রায় ৯ হাজার সিম ও ১০ হাজার ই ওয়ালেট।


সম্প্রতি বিশেষ সূত্রে বাঁকুড়ার পুলিশ জানতে পারে বাঁকুড়ার বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে সাইবার প্রতারণার বড়সড় জাল। ঘটনার তদন্তে নেমে রীতিমত চক্ষু চড়কগাছ হয় তদন্তকারীদের। জানা গিয়েছে, কোতুলপুর এলাকার সিম কার্ড ব্যবসায়ী রামপ্রসাদ দিগরের কাছ থেকে একসঙ্গে হাজার হাজার প্রি আক্টিভেটেড সিম কার্ড কিনত বাঁকুড়ার ধবগ্রামের বাসিন্দা অভিষেক মন্ডল। এই অভিষেক মন্ডল প্রতিটি সিমের জন্য কাস্টমার অ্যাপ্লিকেশন ফর্মে ভুয়ো নথি দাখিল করে তা আক্টিভেট করত। এরপর প্রতিটি সিম কার্ডের ভিত্তিতে একটি করে ই ওয়ালেট তৈরি করত এই অভিষেক মন্ডল। পুলিশ তদন্তে জানতে পেরেছে, প্রতিটি সিমকার্ডের ভিত্তিতে তৈরি করা ই ওয়ালেট ও তার পাসওয়ার্ড  মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দেওয়া হত দেশ জুড়ে ছড়িয়ে থাকা বিভিন্ন প্রতারক গোষ্ঠীকে। এই প্রতারক গোষ্ঠীর সঙ্গে অভিষেক মন্ডল যোগাযোগ রাখত টেলিগ্রাম নামক একটি বিশেষ মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন মাধ্যমে। ই ওয়ালেট বিক্রি করার টাকা অভিষেক বিনিয়োগ করেছিল ক্রিপ্টো কারেন্সিতে। এজন্য একাধিক ক্রিপ্টো ওয়ালেটও তৈরি করা হয়েছিল বলে জানতে পারে তদন্তকারীরা।


জানা গেছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের প্রতারকরা এই ক্রিপ্টো ওয়ালেটের মাধ্যমে টাকা লেনদেন করত অভিষেক মন্ডলের সঙ্গে। পুলিশ তদন্তে নেমে মোট ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের কাছ থেকে বহু ভুয়ো নথি উদ্ধারের পাশাপাশি ৮২৮২ টি ভুয়ো প্রি আক্টিভেটেড সিম, ৭ টি বিভিন্ন ব্যাঙ্কের পাসবই, ২৩ টি মোবাইল,  ১ টি ল্যাপটপ,  একটি ডেস্কটক,  ১ টি ক্যামেরা ও ১ লক্ষ ১৫ হাজার নগদ টাকা ও ১৫ টি ডেবিট কার্ড উদ্ধার করেছে। এর পাশাপাশি দশ হাজারের বেশি ভুয়ো ই ওয়ালেটের হদিশ পেয়েছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ তদন্তে জানতে পেরেছে গত দু বছরের বেশি সময় ধরে সক্রিয় রয়েছে এই চক্রটি। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছে এই পদ্ধতিতে আনুমানিক ৪০ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা প্রতারণা করেছে এই চক্রটি। এই চক্রের সাথে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের একাধিক  বড়  প্রতারক চক্রের যোগ রয়েছে বলেও জানতে পেরেছে পুলিশ।