পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া: রাজস্থানে নিয়ে গিয়ে মোটা দরে শিশুকন্যা বিক্রির পরিকল্পনা ছিল বাঁকুড়ার জওহর নবোদয় বিদ্যালয়ের প্রিন্সিপালের। সেই লক্ষ্যেই মিথ্যে পরিচয় দিয়ে দুই শিশুকন্যাকে নিজের হেফাজতে রেখেছিলেন তিনি। তদন্তে চাঞ্চল্যকর দাবি পুলিশের। মানতে নারাজ পরিবার। রাজনৈতিক তরজা জারি।


শিক্ষক মানেই মানুষ গড়ার কারিগর। কিন্তু বাঁকুড়ার কালপাথর এলাকায় সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধেই উঠেছে শিশু কেনাবেচা ও পাচারের চেষ্টার অভিযোগ। পুলিশ সূত্রে দাবি, উদ্ধার শিশুগুলির মধ্যে ২ কন্যাসন্তানকে রাজস্থানে শিশুকন্যা বিক্রির পরিকল্পনা ছিল জওহর নবোদয় বিদ্যালয়ের প্রিন্সিপাল ধৃত কমল কুমার রাজোরিয়ার। মিথ্যা পরিচয় দিয়ে দুই শিশুকন্যাকে নিজের হেফাজতে রেখেছিলেন তিনি।


পুলিশ সূত্রে দাবি, দুর্গাপুরের লকগেট এলাকার এক মহিলার কাছ থেকে ১ লক্ষ ৭৬ হাজার টাকায় ৩ শিশুকে কেনা হয়। দুই কন্যা সন্তানকে কিনলে তবেই পুত্রসন্তানকে বিক্রি করবেন এই শর্ত রাখেন মহিলা। সেইমতো, দুই শিশুকন্যাকে নিজের কাছে রেখে দেন প্রিন্সিপাল। আর পুত্রসন্তানকে কিনে নেন প্রিন্সিপালের সহকর্মী শিক্ষিকা সুষমা শর্মা ও তাঁর স্বামী সতীশ ঠাকুর। ধৃত কমল কুমার রাজোরিয়ার ছেলে রাহুল রাজোরিয়ার অবশ্য দাবি, ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।


এই ঘটনায় জড়িয়ে গিয়েছে রাজনীতিও। সোমবার একটি ছবি ট্যুইট করেন রাজ্যের নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা। তাতে বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ সুভাষ সরকারকে ধৃত প্রিন্সিপাল কমল কুমার রাজোরিয়ার সঙ্গে দেখা যায়। এ নিয়ে বুধবারও অব্যাহত ছিল রাজনৈতিক তরজা। রানিবাঁধের তৃণমূল বিধায়ক তথা খাদ্যপ্রতিমন্ত্রী জ্যোৎস্না মান্ডি বলেন, “এখানে দেখলাম সাংসদের সঙ্গে শিক্ষকের ছবি। কয়েকদিন আগে দেবাঞ্জন কাণ্ডে ট্যুইট করেছিলেন।আমাদের মনে হচ্ছে সুভাষের সঙ্গে শিক্ষকের নিবিড় যোগ রয়েছে। এর সঠিক তদন্ত চাইছি। আগামীত আন্দোলনে নামব এই নিয়ে।’’


বাঁকুড়ার বিজেপি বিধায়ক নীলাদ্রি দানা বলেন, “ঘটনাটা নিন্দনীয়। চাই সঠিক তদন্ত হোক। এবং সিবিআই তদন্ত হোক। রাজ্য সেই তদন্তে সাহায্য করুক। ছবি ওঠার ব্যাপারে বলতে পারি, পিছন থেকে কে কার সঙ্গে ছবি তুলে নিচ্ছে বোঝা মুশকিল। তবে ভুয়ো আইএএস নিয়ে বলতে পারি, ভুয়োতে ভরে গিয়েছে রাজ্য। এদিকে উদ্ধার হওয়া ৫ শিশুকে আপাতত একটি হোমে রাখা হয়েছে। ’’