পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া: প্রথমে রোগী আত্মীয়দের সঙ্গে যেচে আলাপ। তারপর চা খাইয়ে বেহুঁশ করে লুঠপাট। এমনই কায়দায়, রোগীর আত্মীয়দের টাকা-মোবাইল লুঠের অভিযোগ উঠল বাঁকুড়া সম্মলিনী মেডিক্যাল কলেজ-হাসপাতালে। তিন দিন আগেই হাসপাতালে চুরির অভিযোগে ধরা পড়েছিল একজন। এবার মাদক মেশানো চা-খাইয়ে লুঠপাটের ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে হাসপাতাল চত্ত্বরের নিরাপত্তা নিয়ে।
হাসপাতাল চত্ত্বরে রোগীর আত্মীয়দের মধ্যে অনেকেই রাতে আশ্রয় নিয়ে থাকেন। বাইরে থাকার সুবাদে একে অপরের সাথে সম্পর্ক তৈরি হয়ে যায়। সেই সম্পর্কের সুযোগ নিয়েই চায়ের সাথে কিছু মাদক জাতীয় খাবার মিশিয়ে বেহুঁশ করে রোগীর আত্মীয়দের কাছে থাকা সর্বস্ব লুঠ করেছে দুষ্কৃতকারীরা। জানা গেছে, একাধিক রোগীর আত্মীয়ের কাছ থেকে প্রায় ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা লুঠ করা হয়েছে। যাঁদের টাকা পয়সা লুঠ হয়েছে তাঁদের অনেকের বাড়ি কোতুলপুর এলাকায়। সোমবার বেলায় ৬ জনকে বেঁহুশ হয়ে পড়ে থাকতে দেখেন টহলরত পুলিশকর্মীরা। প্রাথমিক চিকিৎসার পর জ্ঞান ফিরলে জানা যায়, তাঁদের টাকা, মোবাইল লুঠ হয়ে গিয়েছে।
সুমি মুর্মু নামে একজন জানিয়েছেন, ‘আমরা দু’বোন বসেছিলাম। আমাদের সঙ্গে একজন আলাপ করে। চা-ওয়ালার থেকে চা কিনে খাওয়ায়। আমরা অজ্ঞান হয়ে যাই। আমাদের টাকা, মোবাইল সব লুঠ হয়ে গিয়েছে।’
এ বিষয়ে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম প্রধান জানিয়েছেন, ‘রোগীদের থাকার জন্য যে জায়গা সেখানে ৬ জনকে বাইরে থেকে চা খাওয়ায়। বেহুঁশ হয়ে যায়। পুলিশ উদ্ধার করে। আমরা মানুষকে সচেতন করছি। মাইকিং করা হবে। নিরাপত্ত রক্ষী ও পুলিশকে সতর্ক করা হয়েছে।’
সোমবার থেকে শুরু হয়েছে মাইকে প্রচার। অপরিচিত কারও কাছ থেকে কিছু না খাওয়ার বিষয়ে সবাইকে সচেতন করছে পুলিশ। সন্দেহভাজন এক যুবককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
হাসপাতাল চত্বরেই রয়েছে পুলিশ ক্যাম্প। রয়েছে নিরাপত্তা রক্ষীও। তারপরেও চুরি, মাদক মেশানো চা খাইয়ে লুঠপাটের ঘটনায় প্রশ্নের মুখে হাসপাতালের সুরক্ষা ব্যবস্থা। এই ঘটনায় অন্য রোগীদের আত্মীয়রাও আতঙ্কিত। জগন্নাথ মুর্মু নামে এক রোগীর আত্মীয় জানিয়েছেন, ‘আমরা হাসপাতালে আছি। বাইরে থেকে চাওয়ালা চা নিয়ে আসছে। পরিচিত হয়ে চা খাওয়াচ্ছে। টাকা পয়সা লুঠপাট করছে। দোষীদের শাস্তি চাই।’