বারাসত:  দেড়মাস পর বাড়ি ফিরতেই আক্রান্ত দুই বিজেপি কর্মী। মায়ের সামনেই মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বারাসাতের নবপল্লির ঘটনা। পরিবারের দাবি, ভোটের পর থেকে প্রায় দেড়মাস ঘরছাড়া ছিলেন দুই বিজেপি কর্মী। অভিযোগ, সপ্তাহখানেক আগে তাঁরা ফিরতেই গতকাল রাতে বাড়িতে চড়াও হয় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। মারধর করা হয় দুই বিজেপি কর্মীকে। দুজনকেই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রাতে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। 
ভোট মেটার দু-মাসের মধ্যেই, ফের এভাবে   রাজনৈতিক অশান্তির অভিযোগ উঠল উত্তর চব্বিশ পরগনার বারাসাতে।ভোটের ফল ঘোষণার পর থেকে, প্রায় দেড় মাস ঘরছাড়া ছিলেন নবপল্লির বাসিন্দা, বিজেপি কর্মী মহম্মদ আলি ও জুলফিকার আলি। সপ্তাহ খানেক আগে পুলিশের উদ্যোগে এলাকায় ফেরেন তাঁরা। কিন্তু অভিযোগ, শুক্রবার রাতে বাড়িতে চড়াও হয়ে তাঁদের বেধড়ক মারধর করে তৃণমূলের লোকজন। আক্রান্ত দু’জনকে বারাসাত জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 
আক্রান্ত বিজেপি কর্মী, জুলফিকার আলি বলেছেন,আমার কাকাকে মারধর করেছে। ভোটের ফল ঘোষণার দিন মারধরের ভয়ে চলে গিয়েছিল। বাবা বলেছিল, কোর্ট অর্ডার নিয়ে কাকা ফিরবে। সেটাই হল, তবু কেন তৃণমূল মারল?
যদিও মারধরের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল। তৃণমূল কংগ্রেসের এক  স্থানীয় নেতা বলেছেন, ভোটের আগে আমাদের কাউন্সিলরের উপর হামলা, তখন মারধর হল না। এখন মারধর করব? আমরাই উদ্যোগ নিয়ে বাড়ি ফিরেয়েছিলাম।
তৃণমূল অভিযোগ অস্বীকার করলেও, বিজেপি কর্মীদের মারধরের অভিযোগে দুই তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
উল্লেখ্য,  ভোটের ফল ঘোষণার পর থেকে রাজ্যে রাজনৈতিক হিংসার অভিযোগ করে বিজেপি। তাদের অভিযোগ, দলের কর্মী-সমর্থকদের মারধর করা হচ্ছে। বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।দলের অনেক কর্মীই ঘরছাড়া। যদিও তৃণমূল অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এই ইস্যুতে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের সঙ্গে রাজ্য সরকারের সংঘাত বেঁধেছে। রাজ্যপাল নিজেই কোচবিহার ও পূর্ব  মেদিনীপুরে হিংসার অভিযোগ খতিয়ে দেখতে গিয়েছিলেন। সম্প্রতি দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর রাজ্য ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগ নিয়ে সরব হয়েছেন রাজ্যপাল। তাঁর দাবি, স্বাধীনতার পর দেশে এমন ভোট পরবর্তী হিংসা আগে ঘটেনি।
ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস নিয়ে মামলায় সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টে রাজ্য সরকার অস্বস্তিতে পড়ে। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে দিয়ে অনুসন্ধানের নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আর্জি খারিজ করে দেয় হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ। রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনায় হাইকোর্টের নির্দেশে রাজ্যে এসেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্যরা।