কলকাতা : ভ্যাকসিন প্রতারণাকাণ্ডে এবার মূল অভিযুক্ত দেবাঞ্জন দেবের সংস্থার ৩ কর্মীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। পুলিশের দাবি, ধৃত সুশান্ত দাস ও রবীন শিকদার কলকাতা পুরসভার ভুয়ো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সই করতেন। আরেক ধৃত শান্তনু মান্না দেবাঞ্জনের সংস্থার কর্মী হিসেবে বিভিন্ন ক্যাম্প আয়োজন করতেন। এদের জেরা করে চক্রে আর কারা জড়িত, খতিয়ে দেখছে পুলিশ।


এদিকে দেবাঞ্জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে একটি ওষুধ কোম্পানি। অভিযোগ, তাদের টেন্ডার পাইয়ে দেবে বলে ৪ লক্ষ টাকা নিয়েছিল দেবাঞ্জন। 


কসবাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত দেবাঞ্জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে একের পর এক তথ্য প্রকাশ্যে আসেছে। অভিযোগ উঠেছে, নিজেকে প্রভাবশালী প্রমাণ করতে গাড়ি ভাড়া নিয়ে ঘুরত দেবাঞ্জন। সাদা নম্বর প্লেটের গাড়ি ভাড়া করে ঘুরত সে। গাড়ির মাথায় লাগিয়েছিল নীল বাতি। কলকাতা পুরসভার প্যাড ব্যবহার করে গাড়ি ভাড়া নেওয়া হত। দেবাঞ্জন মাসে ৫২ হাজার টাকা গাড়ি ভাড়া দিত বলে দাবি গাড়ির মালিকের। 


এছাড়া দেবাঞ্জনের বিরুদ্ধে নবান্নের প্যাড জাল করেও প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। ‘স্বরাষ্ট্র ও পার্বত্য বিষয়ক দফতরের নামে বিজ্ঞপ্তি দেয় সে। নিজের নিরাপত্তায় অবসরপ্রাপ্ত বিএসএফ অফিসারকে নিয়োগ করে। নবান্নের প্যাড জাল করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে দেবাঞ্জনের বিরুদ্ধে। প্রতারিত হয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত বিএসএফ অফিসার জাতীয় স্তরের প্রাক্তন সাঁতারু। 


প্রসঙ্গত, সরকারি নথি জাল করে ভুয়ো আইএএস পরিচয়ে মঙ্গলবার কসবার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে ভ্যাকসিনেশন ড্রাইভের আয়োজন করা হয়। সচেতনতা প্রচারে সেখানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল মিমি চক্রবর্তীকেও। সেই ক্যাম্পে গিয়েই নিজের ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ নেন মিমি। কিন্তু ভ্যাকসিন নেওয়ার পরে কোনও সার্টিফিকেট না আসায় সন্দেহ হয় তাঁর। খোঁজ নিয়ে সাংসদ জানতে পারেন, ওই ক্যাম্পে ভ্যাকসিন নেওয়া কারোরই সার্টিফিকেট আসেনি। এরপরেই থানায় অভিযোগ দায়ের করেন মিমি। পুলিশ তদন্ত করতে গিয়ে জানতে পারে, দেবাঞ্জন দেব নামে ওই ব্যক্তি ভুয়ো আইএএস অফিসার ও জয়েন্ট কমিশনার অফ কলকাতা কর্পোরেশনের পরিচয় দিয়ে ভ্যাকসিনেশন ড্রাইভের আয়োজন করেছিলেন। 


এদিকে এই ঘটনার প্রতিবাদে আজ নবান্ন পর্যন্ত মিছিলের ডাক দিয়েছে বিজেপির শ্রমিক সংগঠন। বিজেপির রাজ্য দফতর থেকে নবান্ন পর্যন্ত মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছে।