কলকাতা: সামনে গুজরাত বিধানসভা ভোট। গেরুয়া শিবিরের মুখে ফের সেই রাম মন্দির প্রসঙ্গ।২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে যা আরও জোরালো হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা।কারণ, ইতিহাস বলছে রাম মন্দির ভোটবাক্সে ডিভিডেন্ট দেয়।আর এই প্রেক্ষাপটে সেই হিন্দুত্বের তাস নিয়ে এ রাজ্যেও ঝাঁপাতে চলেছে বিজেপি।


বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, একসময় দেশভাগের পরে এরাজ্যের মানুষ কংগ্রেসকে, সিপিএমকে ভোট দিয়েছে। পরে তৃণমূলকে দিয়েছে। এখন রাম মন্দির তৈরি হবে। তাই দলে দলে বিজেপিতে আসছে।

কিন্তু, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বঙ্গে শুধু রাম মন্দির আবেগ দিয়ে বাজিমাত করা কঠিন। সম্ভবত এটা বুঝেই এক বঙ্গসন্তানকে নিজেদের মতো করে হিন্দুত্বের রথের সামনে বসিয়ে, ভোটযুদ্ধে নামতে চাইছে রাজ্য বিজেপি। তিনি স্বামী বিবেকানন্দ।

বিজেপির রাজ্য সভাপতি স্বীকার করছেন, রাজ্যে দলের সাংগঠনিক শক্তি এখনও কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছয়নি।

সংগঠন এখনও সেভাবে মজবুত নয় বলেই কি খামতি ঢাকতে হিন্দুত্বের অস্ত্রে ভর করছে গেরুয়া শিবির? সেজন্যই কি বিবেকানন্দকে সামনে রেখে ঘরে ঘরে পৌঁছতে চাইছে তারা?

বিবেকানন্দকে নিয়ে বুথ স্তরে কর্মসূচী গ্রহণের কথা বলেছেন দিলীপ ঘোষ।

কিন্তু, বিজেপির নজর হঠাৎ করে বিবেকানন্দ কেন? তাহলে কি বাঙালির হৃদয় সম্রাটকে নিজেদের ছাঁচে ফেলে নিছকই হিন্দু হৃদয় সম্রাট হিসাবে তুলে ধরার চেষ্টা করছে বিজেপি?

দিলীপ ঘোষ বলেছেন, সেই বিবেকানন্দ, যিনি বলেছেন, আমি নিজেকে হিন্দু বলতে গর্ববোধ করি। সেই বিবেকানন্দ যাঁকে আমরা শিকাগো ভাষণের ছবিতে দেখি, হিন্দু মঙ্ক অফ ইন্ডিয়া। তাঁকে বিবেকানন্দ হিসেবে সারা বাংলা চেনে।

বিরোধীরা দাবি করছে, ভোট সামনে এলেই বিজেপির রামমন্দির মনে পড়ে! স্বামীজিকে মনে পড়ে। এটা আসলে ধর্মের সুড়সুড়ি দিয়ে ভোটবাক্স ভরানো।

স্বামীজি সারাজীবন ধর্মের থেকে এগিয়ে রাখতেন মনুষ্যত্বকে। ছোট্ট জীবনকালে মানব সেবা ছাড়া তাঁর অন্য কোনও উদ্দেশ্য ছিল বলে কারোর মনে হয়নি কখনও। কিন্তু, বঙ্গ রাজনীতিতে কি সেই মণীষীকে নিয়েও এখন শুরু হবে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির দড়ি টানাটানি? এই প্রশ্নটাই এখন ঘোরাফেরা করছে রাজনৈতিক মহলে।