কিন্তু কে এই গৌড়? জানা যাচ্ছে, নরেন্দ্র সিংহ গৌড় বিজেপির চারবারের বিধায়ক। কেশরীনাথ ত্রিপাঠী যখন উত্তরপ্রদেশে বিজেপির সক্রিয় রাজনীতিতে ছিলেন, তখন থেকেই নাকি তাঁর ঘনিষ্ঠ বৃত্তে এই নরেন্দ্র সিংহ গৌড়। যিনি উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীও।
এহেন প্রোফাইল দেখে শিক্ষাবিদদের একাংশের অভিযোগ, এ তো শিক্ষায় বিজেপির প্রভাব কায়েমের চেষ্টা! তাঁদের বক্তব্য, এই নিয়োগই আসলে দলতন্ত্র কায়েমের প্রথম পদক্ষেপ। যা শুরু হচ্ছে কার্যত রাজভবন থেকে। তবে যাঁকে ঘিরে বিতর্ক, সেই নরেন্দ্র সিংহ গৌড় আবার বলেছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রাজনীতির জায়গা নয়। এ নিয়ে আচার্যর প্রতিক্রিয়া মেলেনি। অবশ্য রাজভবন সূত্রের বক্তব্য, রাজনৈতিক কারণে নয়, যোগ্যতার জন্যই নরেন্দ্র কুমার সিংহ গৌড়কে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতিতে নিয়োগ করা হয়েছে।
তবে দেশের প্রথম সারির বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সাম্প্রতিককালে বিজেপি নিজেদের লোক বসানোর চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ। নরেন্দ্র মোদীর আমলে পুণে ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউটে চেয়ারম্যান করা হয়েছে গজেন্দ্র চৌহানকে। পর্দায় যাঁর পরিচিতি মহাভারতের যুধিষ্ঠির হিসেবে। আর পর্দার বাইরে মোদী ভক্ত বিজেপি কর্মী বলে। পাশাপাশি ‘শোলা অওর শবনম’ বা ‘আগ কা গোলা’-র মতো ছবির প্রযোজক পহেলাজ নিহালনি এখন সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ফিল্ম সার্টিফিকেশন অফ ইন্ডিয়া বা সেন্সরবোর্ডের চেয়ারম্যান। এই নিহালনিই লোকসভা ভোটের আগে ‘হর হর মোদী, ঘর ঘর মোদী’ ক্যাম্পেনের মূলে ছিলেন! প্রকাশ্যে তিনি বারবার বলেন, নরেন্দ্র মোদী তাঁর অ্যাকশন হিরো।
আরএসএসের অখিল ভারতীয় ইতিহাস সংকলন যোজনার সদস্য সুদর্শন রাওকে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ হিস্টোরিকাল রিসার্চ বা আইসিএইচআর-এর চেয়ারম্যান পদে বসানো নিয়েও বিতর্ক কম হয়নি। দায়িত্ব নেওয়ার ১৬ মাস পরই অবশ্য তিনি পদত্যাগ করেন।
শিক্ষামহলে প্রশ্ন, যেভাবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতিতে আচার্যর মনোনীত সদস্য হিসেবে উত্তরপ্রদেশের এক বিজেপি নেতাকে নিয়োগ করা হল, সেটাও কি শিক্ষাঙ্গণে পদ্মফুল চাষেরই নতুন প্রচেষ্টা?