কলকাতা  ও নয়াদিল্লি:  ডিসেম্বরে রাজ্যজুড়ে রথযাত্রা কর্মসূচি নিয়েছে বিজেপি। হুঁশিয়ারির সুরে দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন, পুলিশ-প্রশাসন অনুমতি না দিলেও রথযাত্রা হবেই। পাল্টা আক্রমণের পথে হেঁটেছে তৃণমূল।


৭ ডিসেম্বর যে তিনটি রথ পথ চলা শুরু করবে, সেগুলি ৪২টি লোকসভা কেন্দ্রের ওপর দিয়েই যাবে। যাত্রাপথে ৫ হাজার জনসংখ্যা বিশিষ্ট এলাকা থাকলেই সেখানে দাঁড়াবে এবং প্রচার করবে।

রথের যাত্রাপথে প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রে একটি করে প্রকাশ্য সভা হবে এবং যাত্রাপথে প্রতিটি লোকসভা কেন্দ্রে একটি বড় জনসমাবেশের আয়োজন করা হবে।

এই সমাবেশগুলিতে মুখ্য বক্তা থাকবেন একজন কেন্দ্রীয় নেতা। বাইরে থেকে আনা হবে তারকাদেরও।

প্রাথমিক ভাবে তিনটি রথের যাত্রাপথ নির্দিষ্ট করা হয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগর থেকে যে রথটি যাত্রা করবে সেটি ডায়মন্ডহারবার, মথুরাপুর, জয়নগর, বসিরহাট,  বারাসাত, ব্যারাকপুর, দমদম, শ্রীরামপুর, আরামবাগ, হুগলি, হাওড়া, কলকাতা, যাদবপুর  হয়ে ব্রিগেডে পৌঁছবে।

বীরভূমের তারাপীঠ থেকে দ্বিতীয় রথটি যাবে বোলপুর, বর্ধমান, দুর্গাপুর, কালনা, বিষ্ণুপুর, আসানসোল, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুর, ঘাটাল, কাঁথি, তমলুক, উলুবেড়িয়া হয়ে কলকাতা আসবে।

তৃতীয় রথটি কোচবিহারের মদনমোহন মন্দির থেকে আলিপুরদুয়ার যাবে। সেখান থেকে জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, রায়গঞ্জ, বালুরঘাট, মালদা, জঙ্গিপুর, বহরমপুর, কৃষ্ণনগর, রানাঘাট বনগাঁ হয়ে ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ড।

রাজ্য বিজেপি সূত্রে দাবি, যেহেতু দ্বিতীয় ও তৃতীয় রথ দুটির যাত্রাপথ দীর্ঘ হচ্ছে, সেক্ষেত্রে আরেকটি রথ নামিয়ে এই রথ দুটির যাত্রাপথ কমানো হতে পারে। তবে রথগুলিকে ৪৫ দিনের মধ্যে যাত্রা শেষ করতেই হবে।

গেরুয়া শিবিরের আশঙ্কা, এই কর্মসূচিতে তাদের ব্যাপক বাধার মুখে পড়তে হবে। সেইজন্য কর্মীদের প্রতি নেতৃত্বের বার্তা, মানসিকভাবে প্রস্তুত হয়েই রথযাত্রা বের হতে হবে। তৈরি রাখতে হবে, বিকল্প পরিকল্পনা। প্রশাসনের তরফেও অসহযোগিতা আসবে বলে কর্মীদের তৈরি হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব।

তৃণমূল অবশ্য বলছে, রাজ্যে অশান্তি তৈরি করতেই এই ধরনের কর্মসূচি নিচ্ছে বিজেপি। পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ওরা অসভ্য, বর্বর একটি দল। সব কিছু করতে পারে। কিছু এসে যায় না। তৃণমূল কংগ্রেস কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,  অনুমতির বিষয়টি রাজ্য সরকার দেখবে। তবে বিজেপি হল নিয়ম ভাঙার পার্টি...ওরা নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করে না। কিন্তু বাংলায় গুজরাতের ফর্মুলা চলবে না।

একপক্ষ রথযাত্রা নিয়ে মরিয়া মনোভাব দেখাচ্ছে। আরেকপক্ষ কটাক্ষ ছুঁড়ে দিচ্ছে। রথযাত্রা শুরুর কয়েক মাস আগে থেকেই ঊর্ধ্বমুখী বঙ্গ রাজনীতির পারদ।