ভয়াবহ এক রাত।
নিকষ অন্ধকারে ঢাকা নদীর বুকে মানুষের আর্তচিৎকার, প্রাণ বাঁচানোর আকুতি। কোলের সন্তানকে হারিয়ে মায়ের বুকফাটা কান্না!
শনিবার রাত ১১:১৫। কালনার বিখ্যাত ভবা পাগলার উৎসব থেকে বাড়ি ফিরছিলেন শান্তিপুরের শতাধিক বাসিন্দা। অনেকেই সঙ্গে করে নিয়ে এসেছিলেন বাড়ির ছোটদের।
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, কালনা ঘাট থেকে শান্তিপুরের নৃসিংহপুর ফেরি ঘাটে যাওয়ার নৌকায় হুড়োহুড়ি করে উঠে পড়েন শতাধিক যাত্রী। টালমাটাল অবস্থায় ঘাট থেকে কিছুদূর এগোনোর পরই নৌকা উল্টে যায়। নদীতে তলিয়ে যান শতাধিক যাত্রী। যার মধ্যে অনেকগুলি শিশুও ছিল বলে দাবি এলাকাবাসীর।
কালনা ঘাটে তখন প্রচুর মানুষের ভিড়। তাঁরাই প্রাথমিকভাবে উদ্ধারকাজে হাত লাগান
কয়েকজনকে উদ্ধার করে পাঠান হয় হাসপাতালে। অভিযোগ, দুর্ঘটনাগ্রস্তদের দেখতে হাসপাতালে যাননি প্রশাসনের কোনও কর্তা।
কিন্তু, কেন ঘটল এই দুর্ঘটনা?
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, সন্ধে থেকে দীর্ঘক্ষণ ফেরি পরিষেবা বন্ধ থাকার কারণেই একসঙ্গে অত মানুষ নৌকায় উঠে পড়েন। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি,
শনিবার রাতে ফেরিঘাটে ভাড়া নিয়ে দুটি দলের মধ্যে মারামারি শুরু হয়। যার জেরে ৩ ঘণ্টার জন্য বন্ধ থাকে নদী পারাপার। ভিড় ক্রমশ বাড়তে থাকে কালনা ফেরি ঘাটে। অভিযোগ, নৌকার বহন ক্ষমতার চেয়ে বেশি যাত্রী উঠলেও, বাধা দেয়নি পুলিশ।
কিন্তু, প্রতিবছর যে মেলা ঘিরে এত মানুষের সমাগম ঘটে, সেখানে কেন এমন পরিস্থিতি? নেপথ্যে উঠে আসছে তোলাবাজির অভিযোগ। জড়িয়ে গেছে শাসক দলের নাম।
ঘটনার প্রায় ১২ ঘণ্টা পর শুরু হয় উদ্ধার কাজ। কেন সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধারকাজে হাত লাগাতে পারল না প্রশাসন? কেন উৎসব উপলক্ষ্যে গভীর রাত পর্যন্ত পর্যাপ্ত ফেরি পরিষেবা রাখা হল না কেন? প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
ভিডিওতে দেখুন ঘটনাটি