কলকাতা: বিশ্বভারতীর শতবর্ষ উৎসব উপলক্ষে রাখা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির করা মন্তব্যের সমালোচনা করল তৃণমূল কংগ্রেস।


এদিন তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু দাবি করেন, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে রবীন্দ্রনাথের পরিবার সম্পর্কে ভুল তথ্য পেশ করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘মেজদাকে বলেছেন বড়দা, উচ্চারণ ভুল করেছেন জ্ঞানদানন্দিনীর।’


ব্রাত্যর প্রশ্ন, প্রধানমন্ত্রী এত বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা বললেন, কিন্তু, তাঁর মুখে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা শোনা যায়নি। বলেন, এত বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা বললেন, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় নেই?’


রবীন্দ্রনাথের উক্তিকে হাতিয়ার করে এদিন বিশ্বভারতীর আচার্যকে আক্রমণ করেন ব্রাত্য। বলেন, ‘ধর্মের নামে হয় নরবলি-বুদ্ধির বলি, বলেছিলেন রবীন্দ্রনাথ।’ তাঁর প্রশ্ন, ‘কী বলবেন প্রধানমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথের এই বক্তব্যের?’


গুজরাতের সঙ্গে গুরুদেবের গভীর যোগের কথাও এদিন মনে করিয়ে দেন মোদি। বলেন, ‘ক্ষুধিত পাষাণের একটা অংশ গুজরাতে থাকাকালীন লেখা।’


এই বিষয়টিকে কটাক্ষ করেন ব্রাত্য। বলেন, আমরা তো রবীন্দ্রনাথকে বাংলার কবি হিসেবে মেনে করি না। তিনি তো বিশ্বকবি। তাহলে দেশের প্রধানমন্ত্রী কেন কবিগুরুর সঙ্গে গুজরাতের যোগাযোগ করাতে এত উৎসাহী?


বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আজ ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে যোগ দিলেন প্রধানমন্ত্রী তথা বিশ্বভারতীর আচার্য নরেন্দ্র মোদি।

ভার্চুয়াল বার্তায় তিনি বলেন, ‘সংস্কৃতি-সাহিত্যে ভরপুর এই বাংলা। পড়াশোনার পাশাপাশি প্রশিক্ষণ, দুই ভাবধারার জন্ম বিশ্বভারতীতে।’


তাঁর আশা, ‘দেশে যেন ভয়ের পরিবেশ না থাকে, জ্ঞান যেন মুক্ত হয়। নতুন জাতীয় শিক্ষানীতিতে মুক্ত জ্ঞানের কথা।’


মোদি বলেন, ‘বিশ্বভারতী মানেই গুরুদেবের চিন্তন, দর্শনের স্বার্থক রূপ। কবিগুরুর এই প্রতিষ্ঠান দেশকে শক্তি জুগিয়েছে। স্বাধীনতা আন্দোলনেও বিশ্বভারতীর অবদান রয়েছে। নব ভারতের নির্মাণে বিশ্বভারতী কাজ করে গিয়েছে।’


তিনি যোগ করেন, ‘প্রকৃতির সঙ্গে মিলে অধ্যয়ন ও জীবনচর্যার উদাহরণ বিশ্বভারতী। মোদি মনে করিয়ে দেন, ‘ভারতই একমাত্র বড় দেশ, যে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি অনুসরণ করছে।’


মোদিকে আরও বলেন, ‘গুরুদেব আমাদের স্বদেশ সমাজের সঙ্কল্প দিয়েছিলেন। উনি আমাদের গ্রাম-কৃষি-বাণিজ্যকে আত্মনির্ভর দেখতে চেয়েছিলেন। ভারতকে মজবুত-আত্মনির্ভর তৈরি করতে গেলে সবাইকে প্রয়োজন।’


বিশ্বভারতীর আচার্য বলেন, ‘গৌরব দাও, বিশ্বভারতীর শতবর্ষে এটাই দেশের প্রার্থনা। দেশের পক্ষে বিশ্বভারতীর শতবর্ষ গৌরবের বিষয়।’


মোদির মতে, ‘কাউকে সঙ্গে না পেলেও ‘একলা চলো রে...’ এই মন্ত্রে বিশ্বাস করতে হবে।


মোদি বলেন, ‘বিশ্বভারতী ভারতের শিক্ষাব্যবস্থাকে নতুন চেহারা দিয়েছে। জ্ঞানের এই আন্দোলনে উৎসাহ দিয়েছে বিশ্বভারতী।’


আচার্য আরও বলেন, ‘ভারতের পরম্পরা, রাষ্ট্রবাদ প্রচার করেছে গুরুদেবের বিশ্বভারতী। ভারতমাতা ও বিশ্বের মেলবন্ধন এই বিশ্বভারতী। আত্মনির্ভর ভারতের সূচনা কবিগুরুর কাছ থেকে।’