কলকাতা: আপাতত থমকে গেল পঞ্চায়েত নির্বাচন প্রক্রিয়া। ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত নির্বাচন প্রক্রিয়ায় স্থগিতাদেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। প্রয়োজনে ভোটের দিনক্ষণ পিছোতে পারে বলেও জানিয়ে দিয়েছেন বিচারপতি।
কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদার বৃহস্পতিবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে যে যে প্রশ্ন করেছেন, তার সদুত্তর তারা দিতে পারেনি। বিচারপতি এদিন রাজ্য নির্বাচনের কাছে জানতে চান, ১০ এপ্রিল হাইকোর্ট যে নির্দেশ দেয়, তার প্রেক্ষিতে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে?
১০ তারিখ হাইকোর্ট নির্দেশ দিতে গিয়ে বলে, সুপ্রিম কোর্ট ইতিমধ্যেই নির্দেশ দিয়েছে, কেউ যদি ভোটে লড়তে চান, তাহলে সেটা তাঁর সাংবিধানিক অধিকার। সেই পথকে নিষ্কণ্টক করা কমিশনের দায়িত্ব। কোনও ব্যক্তি বা দল কোনও অভিযোগ করলে কমিশন তা খতিয়ে দেখে আইন মোতাবেক সমাধান করবে।
এই প্রসঙ্গ টেনে বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এদিন কমিশনের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করেন, ৯ এপ্রিল দুপুর ৩টে থেকে ১০ এপ্রিল দুপুর ৩টে পর্যন্ত আপনাদের কাছে কতজন মনোনয়ন দাখিলের আবেদন নিয়ে এসেছেন? এই ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কতজন অভিযোগ জমা দিয়েছেন? ৯ এপ্রিল থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্তই বা কতজন অভিযোগ জানিয়েছেন?
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ৯ তারিখ থেকে ১০ তারিখ পর্যন্ত এই সময়টা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, ৯ তারিখ রাতেই রাজ্য নির্বাচন কমিশন জানায়, ১০ তারিখ সকাল এগারোটা থেকে দুপুর তিনটে পর্যন্ত মনোনয়ন দেওয়া যাবে। কিন্তু, ১০ তারিখ সকালে আবার নতুন বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সেই নির্দেশ ফিরিয়ে নেয় তারা। এই সংক্রান্ত মামলায় কমিশনের ১০ তারিখের নতুন বিজ্ঞপ্তির ওপর স্থগিতাদেশ দেয় হাইকোর্ট।
আইনজ্ঞদের একাংশের মতে, এর থেকেই স্পষ্ট, মনোনয়নের বর্ধিত সময়সীমা প্রত্যাহারের বিজ্ঞপ্তিকে হাইকোর্ট মান্যতা দেয়নি। সেকারণেই বিচারপতি প্রশ্ন করেছে, ৯ তারিখ দুপুর তিনটে থেকে থেকে ১০ তারিখ দুপুর তিনটের মধ্যে ক’জন মনোনয়নের ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন?
যদিও এসব প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেনি রাজ্য নির্বাচন কমিশন। এরপরই ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত পঞ্চায়েত নির্বাচন প্রক্রিয়ায় স্থগিতাদেশ দেন বিচারপতি। তার মধ্যে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কমিশনের কাছে বিস্তারিত রিপোর্টও চেয়েছেন তিনি।
তৃণমূল নেতা কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন এজলাসে বলেন, ভোটের দিনক্ষণ তো ঠিক হয়ে গিয়েছে। তার কী হবে? উত্তরে বিচারপতি বলেন, সেটা রাজ্য নির্বাচন কমিশনের বিষয়। তাঁরা প্রয়োজন মনে করলে ভোট পিছোবেন।
হাইকোর্টের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে বিরোধীরা। সিঙ্গল বেঞ্চের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ তথা আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
তৃণমূল যাওয়ার আগেই হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে ক্যাভিয়েট দাখিল করেছে বিজেপি। তাদের অনুপস্থিতিতে যেন কোনও মামলার শুনানি না হয়, সেই আর্জি জানিয়ে এই ক্যাভিয়েট দাখিল করেছে বিজেপি।