করুণাময় সিংহ, আবীর দত্ত, মালদা: মালদায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে চিনা যুবককে গ্রেফতারির ঘটনায় নতুন তথ্য। আইবি সূত্রে খবর, চিনের সামরিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে স্নাতক হান জুনওয়ে। সামরিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন ইংরেজি নিয়ে পড়াশোনা? সেটাই ভাবাচ্ছে গোয়েন্দাদের। পুলিশ সূত্রে খবর, সূত্র সন্ধানে হানের ল্যাপটপ পাসওয়ার্ড ক্র্যাক করার চেষ্টা চলছে। এর পাশাপাশি, পুলিশ জানিয়েছে, হান জুনওয়ের বয়ানে অসঙ্গতি মিলেছে। এক হাজারেরও বেশি ডেটাবেস চিনে পাচার করেছে হান জুনওয়ে। সাইবার হানার পরিকল্পনা ছিল বলে অনুমান তদন্তকারীদের।


এর পাশাপাশি বাংলাদেশের বাসিন্দা এক চিনা নাগরিকেরও খোঁজ চলছে। পুলিশ সূত্রে খবর, বাংলাদেশের চাঁপাই নবাবগঞ্জে ওই চিনা নাগরিকের সঙ্গে কিছুদিন থেকেছিলেন হান জুনওয়ে। ওই ব্যক্তি বাংলাদেশেই আত্মগোপন করে রয়েছেন নাকি পালিয়ে গিয়েছেন তার সন্ধান চালাচ্ছে মালদা জেলা পুলিশ। শনিবার ধৃত চিনা যুবককে ৬ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে মালদা জেলা আদালত।


মালদা সীমান্তে ধৃত চিনা যুবককে জেরা করছে এনআই। ধৃত হান জুনওয়ে আদতে একজন সাইবার বিশেষজ্ঞ। চিনা সেনাবাহিনীতে যুক্ত এরকম অনেকের সঙ্গেই যোগ ছিল তাঁর। দাবি এনআইএ সূত্রে। ভারত থেকে ১ হাজার ৩০০ সিমকার্ড চিনে নিয়ে গিয়ে, কীভাবে চলত ব্যাঙ্ক প্রতারণা? কীভাবে বিদেশে বসেই ভারতীয় গ্রাহকের টাকা হাতিয়ে নেওয়া হত? গুরুগ্রামে বিলাসবহুল হোটেলের আড়ালে কি ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল প্রতারণার জাল? হান জুনওয়ে-কে জেরা করে এবার এইসব তথ্য পেতেই মরিয়া এনআইএ ও রাজ্য পুলিশ।


ব্যাঙ্ক জালিয়াতির অভিযোগে আগেই লখনউ থেকে হান জুনওয়ের ব্যবসায়িক সহযোগী সান জিয়াংকে গ্রেফতার করেছিল উত্তরপ্রদেশ পুলিশের সন্ত্রাস দমন শাখা। এরপরই হান জুনওয়ের নামে ব্লু কর্নার নোটিস জারি হয়।


বিএসএফ সূত্রে দাবি, জাল নথি ব্যবহার করে ভারত থেকে প্রায় ১ হাজার ৩০০টি সিম চিনে পাচার করে হান জুনওয়ে। সহযোগীদের মাধ্যমে সিমগুলি অন্তর্বাসের আড়ালে চিনে পাচার করা হত। তারপর চিনে বসেই সেই সিমগুলিকে কাজে লাগিয়ে ভারতীয়দের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট হ্যাক করা হত। টাকা লেনদেনের মেশিন পিওএস-এর সাহায্যে হাতড়ে নেওয়া হত অন্যের টাকা।


সূত্রের খবর, এনআইএ-র তদন্তকারীরা মনে করছেন, ধৃত হান জুনওয়ে আদতে একজন সাইবার বিশেষজ্ঞ। চিনা সেনাবাহিনীতে যুক্ত এরকম অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল এই যুবকের। ধৃতকে জেরা করে এনআইএ-এর অফিসাররা জানতে চাইছেন, ১ হাজার ৩০০টি ভারতীয় সিম নিয়ে কী করা হত? আর কোনও সিম তাঁর কাছে আছে কিনা?


শুধু বিদেশে বসে আর্থিক প্রতারণাই নয়, বিএসএফ সূত্রে খবর, ২০২০ সালে প্রায় ৮ কোটি টাকা দিয়ে গুরুগ্রামে ‘স্ট্রার স্প্রিং’ নামে একটি হোটেল কিনেছিলেন চিনা যুবক হান জুনওয়ে। শনিবার সেই হোটেল পৌঁছে গিয়েছিলেন আমাদের প্রতিনিধি। যদিও সেখানে গিয়ে দেখা যায় হোটেলটি বন্ধ।