ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা: পুজোর মুখে রাজ্যে বাড়ল করোনা সংক্রমণের হার। রাজ্য সরকারের সাম্প্রতিক সেন্টিনেল সার্ভে অনুযায়ী, চার জেলায় সংক্রমণের হার তিন শতাংশ বেশি। উৎসবের মরশুমে দলে দলে বেড়াতে যাওয়া নিয়ে সতর্ক করেছে ICMR। চিকিৎসকরা বলছেন, নিয়ম না মানলে সুপার স্প্রেডার হতে পারে দুর্গাপুজো। 


পুজোর মুখে ঊর্ধ্বমুখী কোভিড গ্রাফ। বুধবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নতুন করে করোনা সংক্রমিত হয়েছেন ৭৮৬ জন। ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে পয়লা অক্টোবরের মধ্যে করা রাজ্য সরকারের সেন্টিনেল সার্ভেল্যান্স অনুযায়ী, ৪ জেলায় করোনা সংক্রমণের হার ৩ থেকে ৪ শতাংশ বেশি। এই চার জেলার মধ্যে সবচেয়ে উদ্বেগ বাড়িয়েছে দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ের কোভিড গ্রাফ।


আরও পড়ুন, উৎসবের মরসুমে রাজ্যে ফের ঊর্ধ্বমুখী করোনা সংক্রমণ, ১ দিনে মৃত ১৫


কারণ, পুজোর ছুটি কাটাতে বহু মানুষ পাহাড়মুখী হচ্ছেন এবার। আর সেখান থেকেই বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকরা। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ জয়দীপ চৌধুরী বলেন, এই যে বৃদ্ধি হচ্ছে তা নজর দেওয়া উচিত। থার্ড ওয়েভ আসুক বা না আসুক, ভ্যাকসিন ও টিকা মাস্ট। উৎসবে সে সব ভুলে গেলে অসুস্থদের হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে। আক্রান্তের সংখ্যা ঠেকিয়ে রাখা দরকার।


ইতিমধ্যেই এবিষয়ে সতর্ক করেছে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ বা ICMR। কেন্দ্রীয় সংস্থার তরফে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলা হয়েছে, রিভেঞ্জ ট্যুরিজম বা প্রতিশোধমূলক পর্যটন থেকেই ধেয়ে আসতে পারে করোনার তৃতীয় তরঙ্গ। কী এই রিভেঞ্জ ট্যুরিজম? বহুদিন ঘরবন্দি হয়ে বসে আছি। এখন সংক্রমণ কম। অতএব এবার পুজোয় বেরোতেই হবে। এই মানসিকতাকেই রিভেঞ্জ ট্যুরিজম আখ্যা দিয়েছে ICMR।


আরও পড়ুন, মন্দিরের সামনে বসে রুটি বানাচ্ছেন সারা আলি খান, নবরাত্রিতে নব রূপে সইফ-কন্যা


সম্প্রতি জার্নাল অফ ট্রাভেল মেডিসিনে তাদের একটি গবেষণা রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। ওই রিপোর্টে তথ্য তুলে ধরে দেখানো হয়েছে, পর্যটকদের ভিড়ের কারণে কীভাবে সম্প্রতি হিমাচলের মানালি থেকে এরাজ্যের দার্জিলিং এবং প্রতিবেশী অসমে কোভিড সংক্রণ বেড়েছিল। চিকিৎসক দীপ্তেন্দ্র সরকার বলেন, "এই করোনা আবহে যে পুজো আসছে, প্রথমবার পুজোয় বলেছিলাম প্রাপ্ত বয়স্ক ও বয়স্কদের বাঁচাতে হবে। এবার বলছি শিশু কিশোরদের বাঁচাতে হবে। কারণ তাদের টিকা হয়নি। সুপার স্প্রেডার ইভেন্ট হতে পারে, সেটা মাথায় রাখতে হবে।" 



চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস বলেন, "পুজো আসছে। শিথিলতা নজরে পড়ছে। মাস্ক, দূরত্ব বিধি মানা হচ্ছে না। এসব না মানলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। প্রশাসনকে সতর্ক থাকা দরকার। তা নিয়ে পদক্ষেপ করা দরকার।"