সোনারপুর: রাজ্য জুড়ে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা কমলেও দক্ষিণ ২৪ পরগনার রাজপুর-সোনারপুর পুরসভা এলাকার কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা উদ্বেগ বাড়াচ্ছে প্রশাসনের ৷ এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী ৷ জেলাশাসককে নির্দেশ দিয়েছেন অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ৷ তারপরেই নড়েচড়ে বসেছে স্থানীয় প্রশাসন ৷ প্রশাসনের উদ্যোগে স্থানীয় বাজার কমিটিগুলিকে নিয়ে বৈঠক ৷ সিদ্ধান্ত হয়েছে আগামী সোমবার থেকে ৩ দিন রাজপুর সোনারপুর এলাকায় সমস্ত দোকানপাট ও বাজার বন্ধ থাকবে ৷ শুধুমাত্র ঔষধ ও দুধের দোকান খোলা থাকবে বলে জানানো হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৷ এই বিষয়ে আজ থেকে প্রশাসন ও পুরসভার পক্ষ থেকে চালানো হবে প্রচার ৷ যাতে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র তারা কিনে রাখেন ৷ বৄহস্পতি ও শুক্রবার মাসের ১ ও ২ তারিখ হওযায় বাজার খোলা রাখার অনুমতি দেওয়া হয়েছে ৷ তবে শুক্রবার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে ফের পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন ৷ পুরসভা সুত্রে জানা গিয়েছে,বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে ২৫ জনের বেশি কোভিডে আক্রান্ত হচ্ছেন ৷ এই সংখ্যা তাদের উদ্বেগ বাড়াচ্ছে ৷ তাই এই সিদ্ধান্ত ৷ পাশাপাশি পুরসভার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে প্রতিদিন ৫ হাজার করে বাসিন্দা ভ্যাকসিন পাচ্ছেন ৷
 এরইমধ্যে হুগলির আরামবাগ মহকুমার তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাকেও কনটাইনমেন্ট জোন ঘোষণা করল জেলা প্রশাসন।   গোঘাট গ্রাম পঞ্চায়েত, কামারপুকুর গ্রাম পঞ্চায়েত এবং  নতিবপুর ২ নং গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাকে কনটেইনমেন্ট জোন ঘোষণা করা হয়। ১ জুলাই পর্যন্ত জারি থাকবে বিধি নিষেধ।
উল্লেখ্য,রাজ্যের বেশকিছু অংশের করোনা সংক্রমণের হার নিয়ে নতুন করে উদ্বেগজনিত পরিস্থিতিতে কিছুদিন আগেই  ১৬ জেলায় ২৫১টি মাইক্রো কনটেনমেন্ট জোনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল প্রশাসন। বঙ্গে সবচেয়ে বেশি করোনার সংক্রমণ দেখা গিয়েছে উত্তর ২৪ পরগনায়। সেখানে মাইক্রো কনটেনমেন্ট জোনের সংখ্যা ১৭টি। পূর্ব বর্ধমানে ২২ এবং হাওড়ায় ১৮টি মাইক্রো কনটেনমেন্ট জোন করা হয়েছিল। পাশাপাশি সংক্রমিত এলাকায় ভ্যাকসিনেশন, র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের ব্যবস্থা নেওয়া হয়। কোভিডের প্রথম ঢেউয়ের সময় কনটেনমেন্ট জোনের সঙ্গে পরিচিত হয়েছিল রাজ্যবাসী। এবার সংক্রমণ রুখতে মাইক্রো কনটেনমেন্ট জোনের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।সংক্রমণ শৃঙ্খল ভাঙতে, উত্তর ২৪ পরগনার কিছু অংশকে মাইক্রো কনটেনমেন্ট জোন ঘোষণা করা হয়েছিল। এলাকায় সুরক্ষা বিধি অত্যন্ত কড়াকড়ি করা হয়। বাধ্যতামূলক করা হয় মাস্ক পরা। প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বেরোনোয় নিষেধাজ্ঞা জারি হয়।  সংক্রমণ শৃঙ্খল রুখতে, এর আগে, উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুর পুর এলাকার সমস্ত বাজার এক সপ্তাহ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল প্রশাসন। কয়েকদিন আগে বাঁকুড়া শহরে করোনা আক্রান্ত ৪টি পরিবারের বাড়ি সংলগ্ন এলাকাকে কনটেনমেন্ট জোন হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছিল। এর মধ্যে ছিল হরশ্বর মেলা, অরবিন্দ নগর, খ্রিষ্টানডাঙ্গা ও প্রতাপবাগান। বন্ধ করে দেওয়া হয় সংক্রমিতদের বাড়ির সামনের রাস্তা। সেখানে দেওয়া হয় নো এন্ট্রি বোর্ড। এছাড়া স্যানিটাইজ করা হয় ওই এলাকা। কনটেনমেন্ট জোনের অন্যান্য বাসিন্দাদের চলাফেরায় কোনও নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও বহিরাগতদের প্রবেশ আটকাতে মোতায়েন করা হয় পুলিশ। সংক্রমিতদের বাড়িতে খাদ্যদ্রব্য পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল। 
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় রাজ্যজুড়ে কার্যত লকডাউন জারি করে সরকার। সংক্রমণ ও মৃত্যুর গ্রাফ নিম্নমুখী হতে কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে।