উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: প্রথমবারের ভুল। তাই তৃণমূল মুখপত্রে লেখার জন্য কড়া শাস্তি থেকে রেহাই পেতে চলেছেন অজন্তা বিশ্বাস। সিপিএম সূত্রে খবর, সংগঠনের নিয়ম অনুযায়ী প্রয়াত অনিল বিশ্বাসের কন্যাকে তিন মাস সাসপেন্ড করা হতে পারে।


চমকে ওঠার মতো খবর ছিল সেদিন। তৃণমূলের মুখপত্রে কলম ধরেছেন, সিপিএমের প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক প্রয়াত অনিল বিশ্বাসের মেয়ে, অজন্তা বিশ্বাস। শুধু একটা লেখাই নয়, বাংলায় নারীশক্তির উত্থান নিয়ে, পরপর চারটি কিস্তি ছিল তাঁর কলমে।


জাগো বাংলা-য় রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকের ধারাবাহিক প্রবন্ধের পরই, তুমুল আলোড়ন পড়ে সিপিএমের অন্দরে। দলের শিক্ষা সেলের সঙ্গে যুক্ত অজন্তা বিশ্বাসকে দু’দফায় শোকজ করা হয়। অজন্তা শোকজের জবাবে জানান, তিনি কোনও উদ্দেশ্য নিয়ে লেখেননি। পার্টি দুঃখ পেয়ে থাকলে, তিনি অনুতপ্ত।


প্রবন্ধের একটি অংশে ছিল সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের প্রসঙ্গ। যা নিয়ে ফের অজন্তাকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করায় সিপিএম নেতৃত্ব। জবাবে অনিল-তনয়া বলেন, সংগ্রামী আন্দোলনে ভারতীয় নারীর ভূমিকা আমার গবেষণার বিষয়। জাগো বাংলার পক্ষ থেকে আমার কাছে লেখা চাওয়া হয়েছিল। লেখা পাঠিয়েছি। অন্য কোনও উদ্দেশ্য নেই। পার্টির খারাপ লেগে থাকলে দুঃখিত। যদিও, সিপিএম সূত্রের খবর,  অজন্তা বিশ্বাসের শোকজের জবাবে দল সন্তুষ্ট হতে পারেনি।


সিপিএম সূত্রে জানা গিয়েছিল,  অজন্তা বিশ্বাসের জবাব খতিয়ে দেখবে সিপিএমের কলকাতা জেলা অধ্যাপক সেলের এরিয়া কমিটি। কিছু জানতে চাওয়ার থাকলে ফের অজন্তা বিশ্বাসকে চিঠি দেওয়া হতে পারে। না হলে অধ্যাপক সেলের এরিয়া কমিটির সুপারিশ যাবে সিপিএমের কলকাতা জেলা কমিটিতে।পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে জেলা কমিটি।শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হলে, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার এক্তিয়ার রয়েছে সিপিএমের রাজ্য কমিটির।


সিপিএম সূত্রে এখন যে খবর, দলের কোনও কোনও অংশ চরম শাস্তির পক্ষে থাকলেও, অধিকাংশ সদস্য অবশ্য অজন্তা বিশ্বাসের পাশে দাঁড়ান। সূত্রের খবর, প্রথমবার ভুল বলে, কড়া শাস্তি থেকে রেহাই পেতে চলেছেন অজন্তা বিশ্বাস।


সিপিএম সূত্রে খবর, সংগঠনের নিয়ম অনুযায়ী  প্রয়াত অনিল বিশ্বাসের কন্যাকে তিন মাস সাসপেন্ড করা হতে পারে।সিপিএম কলকাতা জেলা কমিটির কাছে এমনই সুপারিশ পাঠাচ্ছে এরিয়া কমিটি। কলকাতা জেলা কমিটির সম্পাদক কল্লোল মজুমদার জানিয়েছেন, ২১ অগাস্ট, জেলা কমিটির বৈঠকেই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।এরপর থেকে অজন্তা বিশ্বাসের প্রতিটি কার্যকলাপের উপর দল যে কড়া নজর রাখবে তা স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।