সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, উত্তরপাড়া: হুগলির উত্তরপাড়ায় ভ্যাকসিন নিয়ে হাহাকার। বৃহস্পতিবার ভোর রাত থেকে লাইন দিয়ে মেলেনি ভ্যাকসিন, জোগান না থাকায় ভ্যাকসিন দেওয়া হবে না বলে জানানো হয় পুরসভার পক্ষ থেকে। এরপরই উত্তেজনা ছড়ায় উত্তরপাড়া পুরসভা চত্বরে। পুর কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয় আজ দেওয়া হবে ভ্যাকসিন। তাই রাত থেকেই পুরসভা চত্বরে লম্বা লাইন সাধারণ মানুষের। অনেকে বসে রাস্তাতেই। সকাল বেলাতেও ভ্যাকসিনের লম্বা লাইন।


তৃতীয় তরঙ্গের আশঙ্কার মধ্যেই উদ্বেগ বাড়াচ্ছে মারণ ভাইরাসের ডেল্টা প্লাস স্ট্রেন। ভাইরাসের হাত থেকে বাঁচতে ভ্যাকসিন পেতে মরিয়া সবাই।  আর সেই ভ্যাকসিন না পেয়ে গণবিক্ষোভের ছবি ধরা পড়ল রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায়। করোনার তৃতীয় তরঙ্গ আছড়ে পড়ার আশঙ্কার মধ্যেই ভ্যাকসিন হয়রানির ছবি ধরা পড়ল রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। ভ্যাকসিন না পেয়ে গতকালই ক্ষোভ উগরে দেন হুগলির উত্তরপাড়ারার বাসিন্দারা। উঠেছে কালোবাজারির অভিযোগও।


স্থানীয় বাসিন্দা শঙ্কর চট্টোপাধ্যায় বলেন, আমরা বয়স্ক লোক। মাঝরাত থেকে দাঁড়িয়ে আছি। এখন সকালে নোটিস ঝুলিয়েছে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে না। আগে জানালে এই কষ্ট ভুগতে হোত না। সোমনাথ দাম নামে আরেক বাসিন্দা বলেন, রাত ১২টা থেকে লাইন দিয়েছিলাম ভ্যাকসিনের জন্য। তারপরেও এরকম হবে ভাবতে পারিনি। আমাদের কাছে খবর আছে কিছু লোক আজও ভ্যাকসিন নিয়েছে। গতকালও কয়েকজন ভিতর থেকে নিয়ে গিয়েছে। এটা কী ভাবে সম্ভব।


পুরকর্তৃপক্ষ অবশ্য এই অভিযোগ মানতে নারাজ। গতকাল উত্তরপাড়া পুরসভার আধিকারিক সৌমেন ঘোষ বলেন, আমাদের গতকালই নোটিস ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল আজ ভ্যাকসিন দেওয়া যাবে না। যেহেতু স্টক নেই, স্বাস্থ্য দফতর থেকে এলেই দেওয়া হবে। যাঁরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন তাঁরা হয়তো নোটিস দেখতে পাননি, তাই এই অবস্থা।


উত্তরের দার্জিলিং থেকে দক্ষিণের বারাসাতেও গতকাল দেখা যায় একই ছবি। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ির বাগডোগরা বালিকা বিদ্যালয়ে ভোররাত থাকতে ভ্যাকসিনের জন্য লাইন পড়ে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, দীর্ঘ অপেক্ষার পর তাঁদের জানানো হয় ভ্যাকসিন নেই। স্থানীয় বাসিন্দার কথায়, দ্বিতীয় ডোজের সময়সীমা পেরিয়ে গিয়েছে অনেক দিন। এখনও দেওয়ার নাম নেই। ভ্যাকসিন না থাকলে আগে বললেই পারত। প্রতিবাদে  গতকাল বাগডোগরা-পানিঘাটা মোড়ে এশিয়ান হাইওয়ে অবরোধ করেন প্রবীণ নাগরিকরা।


শিলিগুড়ি হাসপাতাল থেকে শুরু করে শীতলাপাড়া সহ বহু জায়গাতেই ভ্যাকসিন মেলেনি বলে অভিযোগ।  স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ৩০-৩৫ জনকে দেওয়ার পরেই বলছে ভ্যাকসিন নেই। ভোর থেকে দাঁড়িয়ে। এদিকে ভিতরে গিয়ে লোকে ভ্য়াকসিন নিয়ে চলে আসছে। এবিষয়ে জানতে দার্জিলিং জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে, জানান, তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন।


একই ছবি ধরা পড়েছে উত্তর ২৪ পরগনার বারাসাতে। টোকেন পাওয়া সত্ত্বেও ভ্যাকসিন না পাওয়ায় পুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বাইরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা। বারাসাত পুরসভা সূত্রে খবর, ভ্যাকসিনের জোগান কম বলেই বিপত্তি। যাঁরা টোকেন পেয়েছেন, তাঁরা সবাই ভ্যাকসিন পাবেন।