সুনীত হালদার, হাওড়া: হাওড়ার দেউলটিতে রূপনারায়ণের পাড়ে সাহিত্যিক শরত্‍চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি। শ্রীকান্ত, পরিণীতা, রামের সুমতির মতো অনেক গল্প-উপন্যাসের জন্ম হয়েছিল এখানে। সেই বাড়ির একতলায় কোমর সমান জল জমে। 


জোয়ার, ভরা কোটাল এবং ঘূর্ণিঝড়-দুর্যোগের জেরে এখন ফুলে ফেঁপে উঠেছে রূপনারায়ণ নদ। তার জেরে জল ঢুকেছে হাওড়ার দেউলটির সামতাবেড়েতে সাহিত্যিকের বাড়িতে। 


একদিকে গঙ্গা, অন্যদিকে রূপনারায়ণ। দুই নদীর জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় জল ঢুকেছে হাওড়ার বিস্তীর্ণ অংশে। গঙ্গার জলস্ফীতির জেরে হাওড়া ফেরিঘাটের একাংশ জলের তলায় চলে গিয়েছে। 


কূল ছাপিয়ে গঙ্গার জল ঢুকছে হাওড়া পুর-এলাকায়। একাধিক বাড়ির একতলা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। গঙ্গার জলে ভাসছে গাদিয়াড়া, সাঁকরাইলের বিস্তীর্ণ এলাকা। 


অসংখ্য জায়গায় বাঁধ উপছে নদীর জল ঢুকেছে গ্রামে। জলমগ্ন হয়ে পড়ে সাঁকরাইল থানা। পুলিশকর্মীরা স্বীকার করে নেন, জলমগ্ন অবস্থায় কাজ করতে প্রচণ্ড অসুবিধে হচ্ছে। 


ফুলে ফেঁপে উঠেছে রূপনারায়ণ নদও। নদের জলে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে শ্যামপুর বাগনানের বেশ কিছু এলাকা। আশ্রয় হারিয়েছেন কয়েকশো পরিবার। নিরাপদ স্থানে সরানো হয় দুর্গতদের। 


জলমগ্ন এলাকা ঘুরে দেখেন জনস্বাস্থ্য কারিগরি মন্ত্রী পুলক রায়। তিনি বলেন, ভরা কোটালের জন্য নদীর জল গ্রামে ঢুকে পড়েছে। বিভিন্ন জায়গায় জলের চাপে বাঁধ ভেঙে যায়। জমা জল যাতে দ্রুত নেমে যায় তার ব্যবস্থা করা হবে। যেসব জায়গায় বাধ ভেঙে যায় অথবা ফাটল দেখা দেয় সেখানে সেচ দপ্তরের কর্মীরা যুদ্ধকালীন তৎপরতায় মেরামতির কাজ শুরু করবে।


অন্যদিকে, পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুরে দুর্যোগ কবলিত এলাকা ঘুরে দেখেন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক সোহম চক্রবর্তী। মানুষকে অভয় দিয়ে তাঁদের উদ্দেশে বলেন, ভয় না পেয়ে বেরিয়ে আসতে।


দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবায় নদীর বাঁধ ভেঙে জলমগ্ন রাঙাবেলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের একাধিক গ্রাম। জলবন্দি হয়ে পড়েন কয়েকশো বাসিন্দা।  তাঁদের উদ্ধারকাজে সাহায্য করেন স্থানীয় বিডিও। ত্রাণ শিবিরে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।