কলকাতা: ভুয়ো ভ্যাকসিনকাণ্ডে কলকাতা পুরসভার জাল হলোগ্রাম তৈরি করিয়েছিলেন দেবাঞ্জন দেব। তদন্তে উঠে এল এমনই তথ্য। ৯ নম্বর ইন্ডিয়া এক্সচেঞ্জ প্লেসে লেজার হলোগ্রাম নামে একটি সংস্থার কাছ থেকে নেওয়া হয় হলোগ্রাম। ব্যবসায়ী নির্মল পুগালিয়ার দাবি, ২০২০-তে কলকাতা পুরসভার আধিকারিক পরিচয় দিয়ে পারচেজ অর্ডার দেখিয়ে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে ৩ হাজার পিস হলোগ্রাম নেন দেবাঞ্জন। চেকের মাধ্যমে টাকা দেওয়া হয় বলে ব্যবসায়ীর দাবি। গতকাল ওই ব্যবসায়ীকে লালবাজারে দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা। কীভাবে ওই ব্যবসায়ীর সঙ্গে দেবাঞ্জনের যোগাযোগ হল তা জানতে চাওয়া হয়। ব্যবসায়ীর দাবি, পারচেজ অর্ডার ভুয়ো তা টেরই পাননি তিনি।


ভ্যাকসিন প্রতারণাকাণ্ডে এবার মূল অভিযুক্ত দেবাঞ্জন দেবের সংস্থার ৩ কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশের দাবি, ধৃত সুশান্ত দাস ও রবীন শিকদার কলকাতা পুরসভার ভুয়ো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সই করতেন। আরেক ধৃত শান্তনু মান্না দেবাঞ্জনের সংস্থার কর্মী হিসেবে বিভিন্ন ক্যাম্প আয়োজন করতেন। পুলিশের দাবি, ভুয়ো অ্যাকাউন্ট চালাতে কলকাতা পুরসভার স্পেশাল কমিশনার তাপস চৌধুরীর সই জাল করতেন দেবাঞ্জনের দুই সহযোগী সুশান্ত দাস ও রবীন শিকদার। এদের জেরা করে চক্রে আর কারা জড়িত, খতিয়ে দেখছে পুলিশ।


শুধু তাই নয়, অভিযোগ,  মাস্ক-স্যানিটাইজার নয়, দেবাঞ্জন সংগ্রহ করতেন করোনার ওষুধও। গতকাল ট্যাংরার এক ওষুধ ব্যবসায়ী কসবা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর অভিযোগ, করোনার ওষুধ ও অন্যান্য সরঞ্জাম সরবরাহ বাবদ দেবাঞ্জনের কাছে প্রায় ২৬ লক্ষ টাকা পাওনা রয়েছে। ২০২০-তে তালতলায় একটি ক্লাবের জগদ্ধাত্রী পুজোর অনুষ্ঠানে ব্যবসায়ীর সঙ্গে আলাপ হওয়ার সময় নিজেকে কলকাতা পুরসভার আধিকারিক বলে পরিচয় দেন দেবাঞ্জন। কলকাতা পুরসভার ভুয়ো অ্যাকাউন্ট থেকে দু’-দু’বার দেবাঞ্জন চেকও দেন বলে ট্যাংরার ওষুধ ব্যবসায়ীর দাবি।


এদিকে ভ্যাকসিন-প্রতারণাকাণ্ডে এবার খুনের চেষ্টার ধারা যুক্ত করার আবেদন প্রক্রিয়া শুরু। অভিযুক্ত দেবাঞ্জন দেবের বিরুদ্ধে আজই আদালতে এই আবেদন করতে চলেছে পুলিশ। দেবাঞ্জনের বিরুদ্ধে আরও একের পর এক প্রতারণার অভিযোগ সামনে এসেছে। পুলিশের দাবি, কলকাতা পুরসভার ১৪৪টি ওয়ার্ডে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের টেন্ডার পাইয়ে দেওয়ার নামে একটি ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থার কাছ থেকে ৪ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন দেবাঞ্জন। সেই টাকা আইসআইসিআই  ব্যাঙ্কের কসবা শাখায় কলকাতা পুরসভার নামে তৈরি ভুয়ো অ্যাকাউন্টে জমা পড়ে বলে দাবি পুলিশের।