বিটন চক্রবর্তী, নন্দীগ্রাম: নন্দীগ্রামে তৃণমূল উপ প্রধানের বিরুদ্ধে সই জাল-সহ সরকারি প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তুললেন দলেরই পঞ্চায়েত সদস্যা। ফের একবার প্রকাশ্যে এল শাসকদলের গোষ্ঠীকোন্দল। এই নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।
আবাস যোজনা হোক বা বিধবা ভাতা, বীজ ধান বিলি থেকে মুরগি-ছাগল প্রদান, বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে সতীর্থ পঞ্চায়েত প্রতিনিধির সই জাল করে টাকা হাতানোর অভিযোগ উঠল তৃণমূলেরই উপপ্রধানের বিরুদ্ধে। এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে নন্দীগ্রাম ১ নম্বর ব্লকের সামসাবাদ পঞ্চায়েতে প্রকট হয়েছে তৃণমূলের কোন্দল।
পঞ্চায়েতের উপপ্রধান শেখ শাহ আলমের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুলে নন্দীগ্রাম ১ নম্বর ব্লকের বিডিও-কে চিঠি দিয়েছেন তৃণমূলেরই পঞ্চায়েত সদস্য নাজুমা বিবি। একগুচ্ছ অভিযোগের তালিকা-সহ এই চিঠি বিডিওকে দিয়েছেন তিনি। পঞ্চায়েত প্রতিনিধির সই জাল, স্বজনপোষণ, রাস্তা তৈরির টাকা আত্মসাতের মতো একগুচ্ছ অভিযোগ তোলা হয়েছে সেখানে।
তৃণমূল কংগ্রেস সামসাবাদ পঞ্চায়েতের সদস্য নাজুমা বিবি জানান, উপপ্রধান সেখ সাহালম তাঁরই সই জাল করে তাঁকে হেনস্থা করছেন। নন্দীগ্রাম ১ বিডিওর কাছে দায়ের করা অভিযোগপত্রে তিনি উল্লেখ করেছেন, উপপ্রধান সরকারি প্রকল্পের আবাস যোজনার বাড়ি নিজের পরিবারের নামে, বেনামে একাধিকবার নিয়েছেন। এছাড়া সরকারি পাকা রাস্তা করতে গিয়ে দুর্নীতি করেছেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে উপপ্রধান সেখ সাহালাম, পালটা নাজুমা বিবিকেই দুর্নীতিগ্রস্থ বলে অভিযুক্ত করেছেন। নাজুমা বিবির বিরুদ্ধে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন উপপ্রধান শেখ শাহ আলম। বলেন, নাজুমা বিবি বিভিন্ন আবাস যোজনার জন্য কাটমানি নিয়েছেন।
গত বিধানসভা ভোটে সবচেয়ে নজরকাড়া কেন্দ্র ছিল নন্দীগ্রাম। সেখানকার পঞ্চায়েতে তৃণমূলের দুই জন প্রতিনিধি পরস্পরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলায় শুরু হয়েছে চাপানউতোর।
এই ঘটনা সামনে চলে আসায় অস্বস্তিতে নন্দীগ্রামের শাসক শিবির। নন্দীগ্রাম ১ নম্বর ব্লক সভাপতির বক্তব্য, এই অভিযোগ ভিত্তিহীন। তবে কি হয়েছে খোঁজ নিয়ে দেখছি। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কোনো ব্যাপার নেই। অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন নন্দীগ্রাম ১ নম্বর ব্লকের বিডিও।
বিধানসভা ভোটের ফলাফলের পর, দলবিরোধী কাজের জন্য নন্দীগ্রামের বেশ কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান, উপপ্রধান সহ একাধিক নেতার বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নিয়েছিল রাজ্যের তৃনমুল নেতৃত্ব। সামসাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের এই অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের পর রাজ্যের শাসক শিবির কী ব্যবস্থা নেয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।