বিটন চক্রবর্তী, তমলুক: পুলিশের প্রিজন ভ্যান থেকে আসামিকে নিয়ে চম্পট শাগরেদদের। পর্দায় এধরনের দৃশ্য আগে একাধিকবার দেখেছেন দর্শকরা। কিন্তু মঙ্গলবার বাস্তবে অনেকটা একই ধরনের ঘটনা ঘটল পূর্ব মেদিনীপুরে। 


মঙ্গলবার সকাল দশটা। মাদক পাচারের অভিযোগে ধৃত দুই বিচারাধীন বন্দি বিশাল দাস ও অনিমেশ বেরাকে নিয়ে মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার থেকে তমলুক জেলা আদালতের দিকে রওনা দেয় পুলিশের প্রিজন ভ্যান। গাড়িতে একেবারে পিছনের দিকে একটি জানলার কাছে বসেছিলেন দু’জন।


অভিযোগ, আদালতে পৌঁছনোর একটু আগে প্রিজন ভ্যানটি জনবহুল এলাকা জেলখানা মোড়ের কাছে পৌঁছতেই গাড়ির জানলার লোহার শিক বেঁকিয়ে দিয়ে সেখান দিয়ে লাফিয়ে চম্পট দেন দু’জন। 


এলাকাটি ব্যস্ত ও জনবহুল হওয়ায় সহজেই ভিড়ের মধ্যে মিশে যেতে অসুবিধা হয়নি পলাতক দুই বন্দির। একথা জানাজানি হতেই শোরগোল পড়ে যায় এলাকায়। ফের একবার প্রশ্নের মুখে পড়ে পুলিশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। 


প্রিজন ভ্যানের চালক বলেন, আমি তো কিছুই বুঝতে পারিনি। যানজটের মতো ছিল। হঠাত্‍ করে দেখতে পাই ওরা দু’জন চলে গেছে।


এদিনের ঘটনা অনেককেই মনে করিয়ে দিয়েছে, ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবরের কথা। সেদিন কাঁথির আদালত চত্বরে পুলিশকে বোমা মেরে কুখ্যাত দুষ্কৃতী কর্ণ বেরাকে নিয়ে পালিয়ে গিয়েছিল তার শাগরেদরা। পরে অবশ্য সেদিনই কর্ণকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। 


তবে মঙ্গলবারের ঘটনায় এখনও পলাতক বন্দিরদের হদিশ মেলেনি। এদিন তাদের খোঁজে বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে তল্লাশি শুরু করেন তমলুকের এসডিপিও অতীশ বিশ্বাস। তিনি বলেন, পলাতক আসামি হলদিয়ার ব্রজলাল চক এলাকার বাসিন্দা।  কী করে এমন ঘটনা ঘটল, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।


সম্প্রতি, গত জুন মাসেই দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাটের করোনা সেফ হাউস থেকে পালিয়ে যায় এক বিচারাধীন বন্দি। এটিএম ভাঙচুরের চেষ্টার অভিযোগে ধরা পড়েছিল ওই যুবক। 


বালুরঘাট আদালতে তোলা হলে তাকে পুলিশি হেফাজতে পাঠান বিচারক। কিন্তু আদালতে পাঠানোর সময় অভিযুক্তের মেডিক্যাল টেস্ট করা হলে তার রিপোর্ট করোনা পজেটিভ ধরা পড়ে। 


বালুরঘাটের মঙ্গলপুরে অবস্থিত স্বাস্থ্য দফতরের তৈরি করোনা সেফ হাউসে যুবককে পাঠায় পুলিশ। সেফ হাউসের সামনে পুলিশি প্রহরা সত্বেও, অভিযুক্ত ওই যুবক সেফ হাউসের ঘুলঘুলি ভেঙে পালিয়ে যায়।