শিলিগুড়ি: বছর গড়ালেই পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে ১০০ দিনের কাজ থেকে শুরু করে নানা সামাজিক প্রকল্পের উপর জোর দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী।
জলপাইগুড়ি, কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ার---বুধবার, এই ৩ জেলার প্রশাসনিক বৈঠক হয় শিলিগুড়ির উত্তরকন্যায়। এই বৈঠক থেকেই জেলার বিভিন্ন স্তরের জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনিক কর্তাদের কড়া বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী। কেউ কেউ পড়েন ধমকের মুখে। বলেন, সামনে পঞ্চায়েত ভোট। দ্রুত কাজ শেষ করুন। না হলে বাকি টাকা আসবে কোথা থেকে।
কোচবিহারের ১০০ দিনের কাজ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ৫০ শতাংশ কাজ হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু গড়ে আঠাশ শতাংশ কাজ হয়েছে। বিডিওদের ও ডিএমকে নির্দেশ দেন, ডিসেম্বরের মধ্যে অধিকাংশ কাজ সেরে ফেলতে হবে।
সবুজ সাথি, ডিজিট্যাল রেশন কার্ড থেকে শুরু করে কন্যাশ্রী। এই সব প্রকল্পের সুফল যাতে প্রান্তিক মানুষ পর্যন্ত পৌঁছয়, তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন কন্যাশ্রীর অ্যাকাউন্টে টাকা পড়েনি, তা জানতে চান।
তৃণমূল সরকারের দাবি, তারা ক্ষমতায় আসার পর থেকে গ্রামীণ স্বাস্থ্য ব্যবস্থা উন্নয়নে জোর দিয়েছে। কিন্তু, সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে ডাক্তারের অভাব। এ দিন সেই প্রসঙ্গও উঠে আসে প্রশাসনিক বৈঠকে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমি তো আর ডাক্তার তৈরি করতে পারি না। কেন্দ্রীয় সরকারের এমন নীতি সব ডাক্তার বাইরে চলে যায়।
কয়েক দিন আগে, ডেঙ্গি নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করে সাসপেন্ড হন বারাসাত জেলা হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার অরুণাচল দত্ত চৌধুরী। এর প্রতিবাদে পথেও নামেন চিকিৎসকরা। আবার সম্প্রতি, জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে কুড়ি জন ডাক্তারকে শোকজ করা হয়। এ নিয়ে এদিন ডাক্তারদের পাশে দাঁড়ান মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর ক্ষোভের মুখে পড়েন জলপাইগুড়ি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক।
মুখ্যমন্ত্রীর এই প্রশাসনিক বৈঠক নিয়ে অবশ্য কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, এ সব নাটক করছে। প্রচার করার চেষ্টা। পশ্চিমবঙ্গে উন্নয়নের যে কোনও কাজ হয়নি তা রাস্তায় বের হলেই দেখা যায়।
পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, গ্রাম বাংলার ভোটের আগে গ্রামীণ ভোটব্যাঙ্ককে আরও সুসংহত করতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই জোর দিচ্ছেন সামাজিক প্রকল্পের কাজে গতি আনতে। পাল্টা বিরোধীরা কটাক্ষ করে বলছে, প্রশাসনিক বৈঠক থেকে বার্তা তো মুখ্যমন্ত্রী আগেও দিয়েছেন। কিন্তু, তাতে কাজ আর হয় কোথায়!
আবার এই বৈঠক থেকেই এদিন মোদী সরকারকে নিশানা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। বন্ধ চা বাগান প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ভোটের আগে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সাতটা চা বাগান খুলবে বলেছিলেন। কিন্তু ধোকা দিয়েছেন। আমরা এই ধরনের কাজ করি না। আমরা কথা দিলে কথা রাখি।
জবাব দিতে দেরি করেনি বিজেপি। দিলীপ ঘোষ বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার বন্ধ চা বাগানে শ্রমিকদের জন্য টাকা পাঠাচ্ছে। ৩৪ কেজি চাল পাঠাচ্ছে। কিন্তু, রাজ্য সরকার তাঁদের হাতে তুলে দিচ্ছে ৩২ কেজি। এখানে চুরি হচ্ছে।
ছিটমহল প্রসঙ্গকে হাতিয়ার করেও এ দিন নাম না করে গেরুয়া শিবিরকে নিশানা করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ছিটমহলে কোনও বিভেদের রাজনীতি করা চলবে না। নজর রাখতে হবে। অনেকে দাঙ্গা করার চেষ্টা করছে। এ নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে। নজর রাখতে হবে কেউ যাতে দাঙ্গা না করতে পারে।
এ ক্ষেত্রেও তৃণমূল সরকারকে নিশানা করে পাল্টা তির ছুড়েছে বিজেপি। দিলীপ ঘোষ বলেন, ছিটমহলে বাংলাদেশের যে অংশ, সেখানে অনেক কাজ হয়েছে। এপারে কিছু হয়নি। কেন্দ্র ৬০০ কোটি টাকা দিয়েছে। কোনও কাজ হয়নি। নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে এ সব বলছে।
নজরে পঞ্চায়েত ভোট, ১০০ দিনের কাজ, রাজ্যের সামাজিক প্রকল্পে জোর, কেন্দ্রকে নিশানা মুখ্যমন্ত্রীর
ওয়েব ডেস্ক, এবিপি আনন্দ
Updated at:
22 Nov 2017 07:50 PM (IST)
NEXT
PREV
রাজ্য (states) লেটেস্ট খবর এবং আপডেট জানার জন্য দেখুন এবিপি লাইভ। ব্রেকিং নিউজ এবং ডেইলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন এবিপি আনন্দ লাইভ টিভিতে ।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -