কলকাতা ও হুগলি: জাল চিকিৎসককাণ্ডের মাঝে এবার হদিশ মিলল জাল ওষুধের। হুগলির ডানকুনিতে বাজেয়াপ্ত বিপুল পরিমাণ সিরাপ, খালি বোতল ও নামী ওষুধের ব্র্যান্ডের স্টিকার। ধৃত গাড়ির চালক।
পুলিশ সূত্রে দাবি, কয়েকদিন আগে বিভিন্ন ওষুধ সংস্থার ওপর নজরদারির কাজে নিযুক্ত একটি সংস্থা ডানকুনি থানায় জাল ওষুধের ব্যাপারে অভিযোগ জানায়। খোঁজখবর নিতে গিয়ে গোপন সূত্র মারফত খবর মেলে, সোমবার রাতে জাল ওষুধ বোঝাই গাড়ি দিল্লি রোড মোড় দিয়ে যাবে। সেই মতো ডানকুনির কাছে ওঁত পেতে বসেছিলেন পুলিশ অফিসাররা।
রাত একটু বাড়তেই দিল্লি রোড মোড়ে এসে পৌঁছোয় এই গাড়িটি। পুলিশ দেখেই গাড়ি থেকে নেমে পালায় দু’জন। গ্রেফতার করা হয় গাড়ির চালককে। তল্লাশি চালিয়ে গাড়ি থেকে মেলে ৬ কার্টেন সিরাপ ভর্তি বোতল। গায়ে আবার তৈরির তারিখও লেখা। তল্লাশিতে মিলেছে ২০ থেকে ৩০ লিটারের দশটি কন্টেনার ভর্তি সিরাপ। ৪-৫টি কার্টেন ভর্তি খালি বোতল এবং ওষুধের নাম লেখা ৫০-৬০টি লেবেল।
জাল ওষুধকে আসলের মোড়ক দিতে তার গায়ে ‘সুগার ফ্রি’ লেখাও ছিল। পুলিশ সূত্রে দাবি, গাড়ির চালক দেবীপ্রসাদ রায়কে গ্রেফতার করা হয়েছে। গাড়িটির মালিকও তিনিই। জেরার মুখে ধৃত দেবীপ্রসাদ দাবি করেছেন, তিনি জাল ওষুধ নিয়ে হুগলির চণ্ডীতলায় যাচ্ছিলেন। সেখানে কাদের কাছে এই এই বিপুল পরিমাণ জাল ওষুধ সরবরাহ করার কথা ছিল, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
এই ঘটনায় পুলিশ ভেজাল খাবার, ওষুধ তৈরি ও বিক্রি, প্রতারণা, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র এবং কপিরাইট আইনের ৬৩ ও ৬৫ নম্বর ধারায় মামলা রুজু করেছে।
এই ঘটনায় তদন্তকারীরা রীতিমতো উদ্বিগ্ন। কারণ, কিছুদিন আগে এই হুগলিতেই আরও একটি জাল ওষুধ চক্রের পর্দাফাঁস হয়। এর আগে ২২ এপ্রিল শ্রীরামপুর স্টেশনের ঢিল ছোড়া দূরত্বে এক ডিস্ট্রিবিউটারের গুদামে হানা দেন রাজ্য পুলিশের এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ এবং রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোল বোর্ডের অফিসাররা। অভিযানে প্রচুর জাল ওষুধ উদ্ধার হয়। গ্রেফতার করা হয় সংস্থার দুই মালিককে।
এছাড়া, মার্চ মাসে বড়বাজারের ক্যানিং স্ট্রিটে একটি চক্রের সন্ধান মেলে, যারা ওষুধের স্ট্রিপের ওপর এক্সপায়ারি ডেট রিপ্রিন্ট করে তা বাজারে বিক্রি করত। অর্থাৎ মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধই শুধু তারিখ বদলে আবার পৌঁছে দেওয়া হত দোকানে। এনিয়ে তদন্তও চালাচ্ছে কলকাতা গোয়েন্দা পুলিশ। একই কায়দায় ওষুধের জাল কারবার সামনে এসেছে হাওড়ার বেলুড়েও। তালিকায় এবার জুড়ল পাশের জেলা হুগলির নামও।