কলকাতা: করোনার তৃতীয় ঢেউ ঠেকাতে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিল স্বাস্থ্য দফতর। ঢেলে সাজানো হচ্ছে শিশুদের করোনা চিকিৎসার পরিকাঠামো। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, ৩ মাস থেকে ১২ বছর বয়সীদের জন্য তৈরি করা হবে ১০ হাজার  কোভিড বেড। এই বিশেষ শয্যা সহ চিকিৎসার ব্যবস্থা তৈরি করা হবে রাজ্যের কোভিড হাসপাতালে।


স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, সদ্যোজাত থেকে ৩ মাস বয়সীদের করোনা চিকিৎসায় রাখা হচ্ছে ৩৫০ এসএনসিইউ। শিশুদের করোনা চিকিৎসার জন্য রাখা হচ্ছে ১৩০০টি পিআইসিইউ। রাজ্যে ৯১টি সরকারি হাসপাতালে গড়ে তোলা হবে এই ইউনিট। পাশাপাশি ৭০টি সরকারি হাসপাতালে গড়ে তোলা হবে ৩৫০ এসএনসিইউ।


করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ সামাল দিতে হিমসিম অবস্থা। তার মধ্যেই চোখ রাঙাচ্ছে মারণ ভাইরাসের তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা। চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশের আশঙ্কা, তৃতীয় ঢেউয়ে শিশুরা আগের তুলনায় বেশি আক্রান্ত হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে আগাম সতর্কতা পথে হাঁটল রাজ্য সরকার। আগেই বেশ কয়েকটি জেলা প্রশাসনই নিজের মতো করে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে।


জলপাইগুড়ি জেলার সরকারি হাসপাতালগুলিতে চাইল্ড কেয়ার ইউনিট তৈরিতে জোর দেওয়া হচ্ছে।  স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত শিশুদের জন্য ২০ বেডের আলাদা সিসিইউ তৈরি হচ্ছে। সেই সঙ্গে জেলার সমস্ত সরকারি হাসপাতালের সিসিইউ-তে বেড বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। গত সপ্তাহে জেলা স্বাস্থ্য দফতর নির্দেশ দেয়, আগামী ১০ থেকে ১২ দিনের মধ্যে প্রতিটি সরকারি হাসপাতালে শিশুদের জন্য ন্যূনতম ২০টি করে সিসিইউ বেড তৈরি রাখতে হবে। এর মধ্যে ৪টে ভেন্টিলেটর বেড থাকবে।


উত্তরবঙ্গের করোনা চিকিৎসায় বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক সুশান্ত কুমার রায় দিন কয়েক আগে জানান, আমাদের মনে হচ্ছে তৃতীয় ঢেউয়ে শিশুদের সংক্রমণ  বাড়বে। তাই এই বন্দোবস্ত। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই চালু হয়ে যাবে। আরও হাসপাতালে জায়গা দেখা হচ্ছে। আমরা চাইছি সব শিশুদের যাতে সেফ রাখা যায়। এটা ১০ এবং ১৭ বছরের শিশুদের মধ্যেই বেশি দেখা যাচ্ছে। এটা নিয়ে আমরা স্টাডি করেছি।


বাঁকুড়ার কাঞ্চনপুর ২ নম্বর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এতদিন যে শিশুদের ওয়ার্ড ছিল, সেটিকেই বদলে ফেলা হয়েছে কোভিড ওয়ার্ডে।  করোনা আক্রান্ত শিশুদের চিকিত্‍সার জন্য তৈরি রাখা হয়েছে ১০টি অক্সিজেন সরবরাহ যুক্ত বেড। পেডিয়াট্রিক কোভিড ওয়ার্ডে আরও যা যা লাগবে, তার জন্যই ইতিমধ্যেই দরখাস্ত পাঠানো হয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতরে।


কাঞ্চনপুর ২ নম্বর ব্লকের স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবজ্যোতি গোস্বামী বলেন, তৃতীয় ঢেউয়ের মোকাবিলায় জরুরি প্রয়োজন পড়লেই যাতে ব্যবহার করা যায় তার জন্য ১০ ওয়ার্ডের শিশুদের কোভিড ওয়ার্ড তৈরি রাখা হচ্ছে। প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আগে একটি অ্যাম্বুল্যান্স ছিল। আরও একটি অ্যাম্বুল্যান্স আনা হয়েছে। ২টি অ্যাম্বুল্যান্সেই অক্সিজেনের ব্যবস্থা রয়েছে।