হাওড়া: জলমগ্ন হাওড়া পুরসভার অন্তত ৩০টি ওয়ার্ড। বেলগাছিয়া, সালকিয়া, ঘুসুড়ি, পঞ্চাননতলা, চার্চ রোড, টিকিয়াপাড়া এবং বেলুড়ের বিভিন্ন এলাকায় জল জমেছে। হাওড়া স্টেশনে রেলের পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব শাখায় লোকাল ও দূরপাল্লার ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক। এখনও পর্যন্ত নির্ধারিত সময়েই ট্রেন চলাচল করছে।

তবে বীরভূমে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। বিভিন্ন নদীর জলস্তর নামতে শুরু করেছে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় খয়রাশোলের পাঁচড়ার কাছে ভেঙে যাওয়া ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক মেরামতির কাজ শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। শুরু হয়েছে যান চলাচল। লাভপুরে লাঘাটা সেতুর ওপর থেকে জল সরে গেলেও, যান চলাচল এখনও শুরু হয়নি।

টানা বৃষ্টিতে জল জমেছে পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোল, রানিগঞ্জ, জামুড়িয়া ও কুলটির বেশ কিছু এলাকায়। বৃষ্টির জেরে জামুড়িয়ার কেন্দা এলাকায় মাটি আলগা হয়ে ধস নামে। রানিগঞ্জের বেশ কয়েকটি এলাকা জলমগ্ন। আসানসোলের রেলপাড় ও কুলটির ৬১ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন বাড়িতে জল ঢুকে পড়েছে।

পূর্ব বর্ধমানের ভাতারে বর্ধমান-কাটোয়া রোডের উপর নরজা মোড়ের কাছে অস্থায়ী সেতুর উপর দিয়ে বইছে খড়ি নদীর জল। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ঘটনাস্থলে যান ভাতারের বিডিও, পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়ার ও আধিকারিকরা। ওই সেতুর পাশে অন্য একটি নির্মীয়মাণ সেতু দিয়ে ছোট গাড়ি চলাচল করছে।

বৃষ্টির জেরে বাঁকুড়ায় দামোদর, গন্ধেশ্বরী ও শালী নদীতে জলস্ফীতি হয়েছে। দামোদরের জলে প্লাবিত ভাদুল ও মীনাপুর এলাকা। শালী নদীর জল ঢুকে পড়ায় সোনামুখীর একাংশ জলমগ্ন।

হুগলির বৈদ্যবাটী পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ড জলমগ্ন। জল জমেছে চুঁচুড়া স্টেশন সংলগ্ন দুটি ওয়ার্ডেও। প্রবল বৃষ্টির জেরে ভদ্রেশ্বরে জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে গঙ্গার ওপর স্থায়ী জেটি। সিঙ্গুর, বলাগড়-সহ বেশ কিছু এলাকায় চাষের জমি জলের তলায়। জলমগ্ন আরামবাগ ও গোঘাটের বিস্তীর্ণ এলাকা।

টানা বৃষ্টিতে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল, চন্দ্রকোণা, কেশপুর ও ক্ষীরপাই-এর বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন। ক্ষীরপাইয়ে নৌকায় চলছে যাতায়াত। মুকুটমণিপুর জলাধার থেকে জল ছাড়ায় শীলাবতী ও কাঁসাই নদীর জলস্তর বেড়েছে। ঘাটাল-চন্দ্রকোণা রোডের উপর দিয়ে বইছে শীলাবতীর জল। নারায়ণগড়, দাঁতন, কেশিয়াড়ি ও বেলদায় প্রবল বৃষ্টিতে যান চলাচল ব্যাহত। কেলেঘাই ও সুবর্ণরেখা নদীর জলস্তর বাড়লেও, তা বিপদ সীমার নীচে রয়েছে।

প্রবল বৃষ্টিতে দিঘার সমুদ্রে জলোচ্ছ্বাস। কাঁথি, এগরা, হলদিয়া, পাঁশকুড়ার বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন। সমুদ্র ও নদী তীরবর্তী এলাকায় নতুন করে সতর্কতা জারি করেছে জেলা প্রশাসন। ফ্লাড সেন্টারগুলিতে সরকারি কর্মীদের প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সমুদ্র বা নদীতে যাওয়ার ক্ষেত্রে মৎস্যজীবীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।