দক্ষিণ ২৪ পরগনা: আজ মকর সংক্রান্তি (Makar Sankranti)। গঙ্গাসাগরে চলছে পুণ্যার্থীদের স্নান।


নিউ নর্মালে গঙ্গাসাগরে মকর সংক্রান্তির স্নানে আজ অন্যবারের তুলনায় ভিড় অনেকটাই কম। ভিন রাজ্য থেকে যে পুণ্যার্থীরা প্রতিবছর আসেন, এবার তাঁরাও কম এসেছেন।


ফলে গঙ্গাসাগর অনেকটাই ফাঁকা। নজরদারি চালাতে টহল দিচ্ছে উপকূলরক্ষী ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। নিরাপত্তায় সহায়তা করছে নৌবাহিনীও।


বুধবার শেষপর্যন্ত শর্তসাপেক্ষে গঙ্গাসাগরে স্নানের অনুমতি দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। জলে ডুব দিয়ে সমুদ্রে স্নানের অনুমতি দিলেও, ই-স্নানের উপরেই জোর দিতে বলেন প্রধান বিচারপতি টিবিএন রাধাকৃষ্ণণ এবং বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বেঞ্চ।


মহামারীর আবহে গঙ্গাসাগর মেলায় ভিড় নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে, জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন অজয় দে নামে এক ব্যক্তি। সাগর মেলা প্রাঙ্গণ ও বাবুঘাটে মেলার মাঠকে কন্টেনমেন্ট জোন হিসেবে চিহ্নিত করার আর্জি জানানো হয়।


করোনা আবহে মেলার আয়োজনে, সরকার কী ধরনের সাবধানতা অবলম্বন করছে, তা জানতে চেয়ে রাজ্য সরকারের কাছে হলফনামা চেয়ে পাঠায় কলকাতা হাইকোর্ট।


মুখ্যমন্ত্রী আগেই জানিয়েছিলেন, এবার গঙ্গাসাগর মেলা (Ganagasagar Mela) হবে অনেক ছোট। বুধবার শুনানি চলাকালীন রাজ্যের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত বলেন, এবার অনেক কম সংখ্যক মানুষ মেলায় অংশগ্রহণ করছেন। গতবারের তুলনায় মাত্র দশ শতাংশ মানুষ এবার এসেছেন। সাগরের জল বদ্ধ নয়, বহমান। সেক্ষেত্রে করোনা ছড়ানোর আশঙ্কা অনেক কম বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।


শেষ অবধি হাইকোর্ট শর্তস্বাপেক্ষে গঙ্গাসাগর মেলা ও স্নানে ছাড়পত্র দিলেও, প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ ই-স্নানে সবচেয়ে বেশি জোর দিয়েছেন। বেঞ্চের নির্দেশ, সাগর সঙ্গমে স্নানে অনুমতি দেওয়া হলেও, রাজ্য সরকার ই-স্নান পরিষেবায় বাড়তি গুরুত্ব দিক। যাঁরা গঙ্গাসাগর মেলার মাঠ থেকে ই-স্নানের কিট সংগ্রহ করবেন, তাঁদের যেন তা বিনামূল্যে দেওয়া হয়। যাঁরা বাড়িতে বসে ই-স্নানের কিট পেতে চাইবেন, তাংদের কাছ থেকে যেন শুধু ডেলিভারি চার্জটুকু নেওয়া হয়, সেই ব্যবস্থা করুক রাজ্য সরকার।


করোনা আবহে গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে রাজ্য সরকারের তরফে সাবধানতা অবলম্বন করা হচ্ছে। সুব্রত মুখোপাধ্যায় সহ একাধিক মন্ত্রী পৌঁছে গেছেন সাগরতটে।


হাইকোর্টের নির্দেশের প্রেক্ষিতে পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, আমরা খুশি। আরও আগে নির্দেশ পেলে ভাল হোত। আমরা সব রকম ভাবে প্রস্তুত। যুব কল্যাণমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস গতকাল বলেন, আমরা ই-স্নানের ওপরেই জোর দেব।


ঠান্ডা আর ভিড়, গঙ্গাসাগরে এবারে দুটোই কম। প্রশাসন সূত্রে দাবি, বুধবার সন্ধে পর্যন্ত ৮ লক্ষর কাছাকাছি পুণ্যার্থী সাগরসঙ্গমে এসেছেন। দুর্ঘটনা বা কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে চলছে নজরদারি।


প্রশাসনিক প্রস্তুতির নিরিখে গঙ্গাসাগর আছে গঙ্গাসাগরেই। কিন্তু মহামারীর দাপটে উধাও চিরপরিচিত জনপ্লাবন।